ফেসবুক অ্যাড থেকে টাকা আয় করা সম্ভব। যদিও ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে অনেকে টাকা আয় করছে। ভিডিও থেকে আয় করার উপায় জানলেও অনেকে ফেসবুক অ্যাড থেকে আয় করার উপায় জানে না। ফেসবুকে অ্যাড দিতে হলে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রদান করতে হয়। অধিকাংশ মানুষ ফেসবুক অ্যাডকে তাদের কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের প্রচারের জন্য ব্যবহার করে।
ফেসবুক অ্যাড হল, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অন্যতম হাতিয়ার। তাই, ফেসবুক অ্যাড থেকে আয় করাটা খুব কঠিন কিছু নয়। ২০১৯ সালে ফেসবুকে সক্রিয় ব্যবহারকারী ছিল ২.৮ বিলিয়ন। এ-সব ব্যবহারকারীর মধ্যে নারীদের সংখ্যা ৭৫% এবং পুরুষের সংখ্যা ৬৩%। মানুষ বেশি হওয়াতে ফেসবুক অ্যাড থেকে অনেকের জন্যেই আয় করার সুযোগ অনেক বেশি।
অনলাইনের প্রতিটি খাত থেকে আয় করা সম্ভব। ফেসবুক থেকে আয় করতে হলে, জানতে হবে আয় করার উপায়গুলো। ইতোমধ্যে নিশ্চয়ই জেনে গিয়েছেন ফেসবুক পেজ থেকে কিভাবে টাকা আয় করতে হয়। আজকে আমরা জানবো ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজমেন্ট থেকে আয় করার উপায়।
১. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রতি মাসে লাখ টাকার উপরে আয় করা সম্ভব। কেননা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইট থেকে পণ্য বিক্রি করে আয় করার পাশাপাশি বিজ্ঞাপন দেখিয়েও আয় করা সম্ভব। এজন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংকে বলা হয় প্যাসিভ ইনকাম। এখন অনেকে বলতে পারেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আবার কি!
বিভিন্ন অনলাইন ওয়েবসাইটের পণ্য বা সেবা বিক্রি করে দেওয়াটাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। আপনি অ্যামাজন ওয়েবসাইট থেকে একটি মোবাইল বিক্রি করার টার্গেট নিলেন। এখন অ্যামাজনে একটি অ্যাফিলিয়েট অ্যাকাউন্ট খুলে সেখান থেকে ঐ পণ্যের লিংক নিলেন। আপনার এই লিংক থেকে যত মানুষ পণ্য কিনবে, তার থেকে একটা নির্দিষ্ট অংশ আপনি পাবেন।
এবার আসুন জেনে নেয়া যাক, ফেসবুক অ্যাডের ভূমিকা কি! ফেসবুকে মাত্র ১০০ টাকা খরচ করে অ্যাড দিলে, আপনি দৈনিক ১৬ থেকে ৪৬ ক্লিক পাবেন। এই ৪৬ জনের মধ্যে কমপক্ষে ৫জন নিশ্চয়ই আপনার পণ্যটি কিনবে। ৫ জন পণ্যটি কিনলে আপনি কমপক্ষে ৫ হাজার টাকা কমিশন পাবেন। এছাড়া, ওয়েবসাইটে ভিজিট করার ফলে আপনার অ্যাডসেন্সের টাকাও পাবেন। এখন বাকী চিন্তা করার দায়িত্ব আপনার! কয়েকটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইট –
- Amazon Associates
- Shopify Affiliate Program
- eBay Partners
- Clickbank
- Bluehost Affiliate Program
ভাবছেন, বাংলাদেশে থেকে এই সব বিদেশী ওয়েবসাইটের এফিলিয়েট করতে হলে তো ইংরেজী ওয়েবসাইট লাগবে! বাংলাদেশ থেকে বাংলায় এফিলিয়েট করা যায় না!
অবশ্যই, যায়।
বাংলাদেশের যে-সব ই-কমার্স বা অনলাইন স্টোরের এফিলিয়েট করে আয় করতে পারেন সেগুলো হলো-
- Affiliate Partner Darazbd
- Affiliate Program With BD SHOP
- Bagdoom Affiliate
- Hostbangla Affiliate
আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে, তা দিয়ে আপনি উপরের যে কোন অনলাইন স্টোরের এফিলিয়েট প্রোগ্রামে জয়েন করতে পারেন। আর আপনার সাইটের এফিলিয়েট কন্টেন্ট ফেসবুকে অ্যাড দিয়ে বিক্রি বাড়ানোর মাধ্যমে আয় করতে পারেন। কিভাবে, করবেন এই সব ই-কমার্সের এফিলিয়েট? আপাতত, উপরের প্রথমটি অর্থাৎ দারাজ এফিলিয়েট থেকে আয় করার উপায় জেনে রাখুন।
উল্লেখ্য, আপনার যদি ওয়েবসাইট না থাকে, তাতে কোনও সমস্যা নেই। ফেসবুক পেজ থাকলেই হবে। আপনার পেজে আপনার এফিলিয়েট প্রোগ্রামের পোস্ট দেবেন আর সেই পোস্ট ফেসবুক অ্যাডের মাধ্যমে বুস্ট করবেন এবং বিক্রিত পণ্য থেকে কমিশন নেবেন।
২. সিপিএ মার্কেটিং
সিপিএ হল কস্ট পার অ্যাকশন। অর্থাৎ, সিপিএ ওয়েবসাইটগুলো আপনাকে কিছু দায়িত্ব দিবে, হতে পারে বিজ্ঞাপনে ক্লিক, নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি বা ফাইল ডাউনলোড ইত্যাদি। তাদের দেওয়া দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারলে আপনি কমিশন পাবেন। ওয়েবসাইট এবং কাজ ভেদে কমিশন কম-বেশি হতে পারে। সিপিএ মার্কেটিং করে মাসে কমপক্ষে ১০০ ডলার আয় করতে পারবেন।
সিপিএ মার্কেটিংয়ের কাজগুলো করতে ফেসবুক অ্যাড চমৎকার কাজ করে। ফেসবুকে বেশি ব্যবহারকারী থাকায় এখান থেকেই আপনার টাস্কগুলো সম্পাদন করতে পারবেন। দেখা যাবে, ১০০ টাকা ফেসবুক অ্যাডে খরচ করে ১ হাজার টাকা লাভ করেছেন। জনপ্রিয় কিছু সিপিএ মার্কেটিং ওয়েবসাইট হল-
- MaxBounty
- Clickbooth
- Peerfly
- Admitad
- W4
৩. পণ্য বিক্রি
আপনার নিজের যদি পণ্য থাকে, তাহলে ফেসবুকের অ্যাডের কোন বিকল্প নেই। ফেসবুকে আপনি প্রায় সকল বয়সের এবং সকল পেশার মানুষ পাবেন। আর ফেসবুক অ্যাডের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল, ফেসবুক অ্যাডে লিঙ্গ, পেশা, বয়স এবং অবস্থান নির্দিষ্ট করে দেয়া যায়। ফলে, কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা পেতে খুব একটা কষ্ট করতে হবে না।
৪. ওয়েবসাইট ক্লিক
অনেকে ব্লগ কিংবা প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট থেকে টাকা আয় করে থাকে। কিন্তু ওয়েবসাইটে যদি ভিজিটর না থাকে, তাহলে টাকা আয় হবে না। আর ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনার মূল দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম ফেসবুক অ্যাড।
ফেসবুক অ্যাডে আপনি খুব স্বল্প পরিমাণ অর্থ খরচ করে বেশি সংখ্যক ভিজিটর আনতে পারবেন। এছাড়া, আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট যদি ভাল হয়, তাহলে স্থায়ী ভিজিটর পেয়ে যাবেন। আপনার ওয়েবসাইটের প্রচার এবং আয় দুটি বৃদ্ধি পাবে।
৫. ইউটিউব ভিউ
ইউটিউব ভিডিও ভিউ বলেন কিংবা সাবস্ক্রাইব, সবকিছু বৃদ্ধি করতে পারবেন অ্যাডের মাধ্যমে। ফেসবুক অ্যাডের মাধ্যমে আপনি ইউটিউব ভিউ পেলে আপনার আয় বৃদ্ধি পাবে। মজার ব্যাপার হল, ফেসবুক থেকে যে ভিজিটর আসবে, তাদের যদি আপনার ভিডিও ভাল লাগে তাহলে সাবস্ক্রাইব করবে। ফলে, আপনার এক ঢিলে দুই পাখি মারা হয়ে যাবে।
ওয়েবসাইটের মত আপনার ইউটিউব চ্যানেলেরও মার্কেটিং হয়ে যাবে। বিশেষ করে যাদের নতুন অ্যাকাউন্ট তাদের জন্য ফেসবুক অ্যাড বেশ উপকারী বলা যায়।
ফেসবুক অ্যাড থেকে আয় করা নিয়ে এই ছিল সংক্ষিপ্ত আলোচনা। আশা করি এসব পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে আপনারা ফেসবুক থেকে আয় করা শুরু করে দিতে পারবেন।
**রিলেটেড আর্টিকেল**
বাংলাদেশ থেকে ফেসবুকে ভিডিও পোষ্ট করে আয় করবেন যেভাবে
MD ASHRAFUL ISLAM
Thanks Sagufta Parveen For Share This
Rakibul Hafiz
Visitor Rating: 5 Stars
Md. Apun Babo
Visitor Rating: 3 Stars