বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে আয় করার বিষয়টি অনেক বেশি জনপ্রিয়। বিশেষ করে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব বা ইন্সটাগ্রাম থেকে আয় করার বিষয়গুলি ক্রমেই দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যেমন, ফেসবুক পেজ থেকে আয় করার অনেক উপায় রয়েছে। রয়েছে, টুইটার থেকে আয় করার উপায়ও।
মোট কথা, একজন সাধারণ ব্যবহারকারী যেখানে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলিকে শুধুমাত্র নিজের তথ্য শেয়ার করা বা পরিচিত মানুষদের সাথে আলাপ আলোচনার জন্য ব্যবহার করেন, সেখানে অনেকেই আছেন যারা এগুলির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে ঘরে বসেই ভালো অংকের অর্থ উপার্জন করে থাকেন।
আপনার নিশ্চয়ই এমন কারো না কারো সাথে পরিচয় রয়েছে, যিনি ইন্সটাগ্রামে প্রতিনিয়তই ছবি শেয়ার করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে চলেছেন। তাকে দেখে যদি আপনার মনেও প্রশ্ন জেগে থাকে যে, আপনার পক্ষেও ইন্সটাগ্রাম থেকে আয় করা সম্ভব কিনা, তাহলে উত্তরটি হচ্ছে “হ্যাঁ”। আপনিও যদি ইন্সটাগ্রামকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে সমর্থ হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার পক্ষেও কাজটি করা সম্ভব।
**রিলেটেড আর্টিকেল**
ফেসবুক অ্যাড থেকে আয় করার ৫টি উপায়
কিভাবে ইনকাম টিউনস থেকে আয় করবেন
ইন্সটাগ্রাম থেকে আয়
ইন্সটাগ্রাম থেকে আয়ের বিষয়টি ব্লগার, ইউটিউব বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতে কাজ করার মতই। আপনার তৈরীকৃত কন্টেন্টের মাধ্যমে আপনি যদি বিপুল সংখ্যক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন, তাহলে একাজটি আপনার জন্য আদর্শ হতে পারে। চলুন জেনে নিই ইন্সটাগ্রাম থেকে আয়ের খুঁটিনাটি বিষয়গুলি।
অর্থ উপার্জনের জন্য আপনার যে পরিমাণ ফলোয়ার প্রয়োজন:
ইন্সটাগ্রাম থেকে অর্থ উপার্জনের জন্য একটি প্রোফাইলে ঠিক কতজন ফলোয়ার প্রয়োজন তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। তবে একটুকুই বলা যায় যে, একাজের জন্য লক্ষ লক্ষ ফলোয়ারের প্রয়োজন নেই। ফলোয়ারের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় বেশ কিছু বিষয়ের উপর ভিত্তি করে।
প্রথম বিষয়টি হচ্ছে, আপনি কোন বিষয়ের উপর ইন্সটাগ্রামে কাজ করছেন। একেক ধরনের বিষয়ের জন্য একেক ধরনের ফলোয়ারের প্রয়োজন পড়ে। এজন্য আগে ইন্সটাগ্রামে কি কি বিষয় নিয়ে কাজ করা সম্ভব তার উপর ধারণা নিন। কাজ করার জন্যে বহু ক্যাটাগরি রয়েছে যেমন: ফ্যাশন, ফুড, বিউটি, ফিটনেস এছাড়াও রয়েছে অনেক জনপ্রিয় বিষয়। এগুলি থেকে আপনার যেটি পছন্দ হয় এবং যেটিতে কাজ করতে আপনি সবচেয়ে বেশী স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন, সেটি বেছে নিন।
দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে যে, আপনার কন্টেন্টের ফলোয়ারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারার ক্ষমতা। আপনার যদি কয়েক লক্ষ ফেক ফলোয়ার থাকে, তবুও তারা আপনার কোন কাজের নয়। কাজেই প্রথমে সঠিক বিষয় নির্বাচন করুন এবং পরে মানসম্মত কন্টেন্ট এর মাধ্যমে প্রকৃত ফলোয়ারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করুন।
বর্তমান সময়ের সফল ইন্সটাগ্রামারগণ তাদের প্রতি পোষ্টে এক হাজার ডলারেরও বেশি ইনকাম করে থাকেন। সে তুলনায় কম পরিমাণ ফলোয়ার নিয়ে আপনার প্রাথমিক যাত্রার আরম্ভকে অবশ্যই ভালো বলা যায়।
যেভাবে ইন্সটাগ্রাম থেকে আয় করবেন:
ইন্সটাগ্রাম থেকে আয়ের ব্যাপারটি অবশ্যই আপনার কন্টেন্টের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা ব্র্যান্ড, আপনার দর্শক এবং আপনি তাদের প্রতি কতটা আন্তরিত তার উপর নির্ভর করে। তবে, এই প্লাটফর্মটি ব্যবহার করে বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করা যায়।
- আপনি চাইলে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হয়ে স্পন্সরকৃত পোষ্ট করতে পারেন এবং আপনার দর্শকদের সামনে তাদের পণ্যের প্রচারের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এক্ষেত্রে, আপনি আসলে ওই কোম্পানীর সোশ্যাল মিডিয়ার রক্ষণা-বেক্ষণ করবেন। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হয়ে অনলাইনে আয় করার বিষয়ে আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন।
- আপনি বিভিন্ন জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের পণ্যের অ্যাফিলিয়েশন নিয়ে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দর্শকদের নিকট সেগুলি বিক্রয়ের চেষ্টা করতে পারেন। যার ফলে প্রতি পণ্য বিক্রয়ে আপনি উক্ত ওয়েবসাইট থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কমিশন হিসাবে পেয়ে যাবেন।
- আপনি সরাসরি আপনার প্রোফাইল থেকেই বিভিন্ন পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।
এখানে মজার বিষয়টি হচ্ছে, আপনি চাইলে উপরের সবগুলি পদ্ধতিতে একই সাথে কাজ করার মাধ্যমে আপনার প্রোফাইলটিকে একটি মানি-ট্রি’তে রুপান্তরিত করতে পারেন।
একজন ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাথে কাজ করা:
এখন নিশ্চয়ই আপনার মনে ইনফ্লুয়েন্সার সম্পর্কে জানার আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। ইনফ্লুয়েন্সার শব্দটির বাংলা অর্থ দাঁড়ায় প্রভাবিত করা। এধরনের কাজের ক্ষেত্রে একজন ইনফ্লুয়েন্সার হচ্ছেন সেই ব্যক্তি, যিনি তার অনলাইন ব্যক্তিত্বকে এমনভাবে মানুষের নিকট সমাদৃত করে তোলেন, যাতে বহুসংখ্যক মানুষ তাকে ফলো করতে থাকে। দর্শকদের কাছে ইনফ্লুয়েন্সার হচ্ছে একজন স্মার্ট, অভিজ্ঞ এবং সমাদৃত ব্যক্তি, বিভিন্ন বিষয়ে যার মন্তব্য দর্শকরা সাদরে গ্রহণ করে থাকেন।
বর্তমান সময়ের অনেক ব্র্যান্ডই রয়েছে যারা দ্রুতগতির এই বাজারে নিজেদের পণ্যের সঠিক প্রচারণার প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েন। আর অবশেষে এসে তাদের পণ্যের প্রচারের জন্য ইনফুয়েন্সারের দ্বারস্থ হন। তারা উক্ত ইনফুয়েন্সার কে একটি তাদের পণ্যের প্রচারের উদ্দেশ্যে একটি পোষ্ট করার জন্য অনুরোধ করেন এবং এর জন্য তাকে পারিশ্রমিক বা সম্মানি প্রদান করে থাকেন।
আমি জানি একজর ক্রিয়েটর হিসেবে নিজের দর্শকদের স্পন্সরড পোষ্টের মাধ্যমে ইনফুয়েন্স করা কতটা কষ্টকর। একই সাথে একজন ক্রিয়েটর এবং একজন ইনফুয়েন্সর হিসেবে নিজের প্রোফাইলের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য যথেষ্ট শ্রম ও মেধার প্রয়োজন।
ইন্সটাগ্রাম থেকে আয় করার জন্য আপনাকে যে সব ধরনের ব্র্যান্ডের সাথেই কাজ করতে হবে এমন কোন শর্ত নেই। এতে বরং লাভের চাইতে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি। আপনি যে ধরনের বিষয় নির্বাচন করে আপনার প্রোফাইলে ফলোয়ার গড়ে তুলেছেন, সবচেয়ে ভালো হয় সেই বিষয়ের উপরেই স্পন্সরড পোষ্ট দিন।
এতে একদিকে যেমন ব্র্যান্ড উপকৃত হবে, অপরদিকে আপনার প্রোফইলটিও মানসম্মত থাকবে। তাই একাজটি করতে হলে প্রথমে বিষয় নির্ধারণ করুন, তারপর নিজের দর্শক তৈরী করুন এবং অবশেষে উপরের পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে আপনার ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইল থেকে আয় করা শুরু করে দিন।
**আরো পড়ুন**
জিমেইলে একসাথে পাঠানো যাবে একাধিক ই-মেইল
গুগল থেকে আয় করার ৫টি কার্যকরী উপায়
Dipu Roy
info
Miraj Selim
Thanks for share your post.