মেয়ের সঙ্গে নাজমুন নাহার
সংসার ও সন্তান সামলাতে গিয়ে ভালো একটি চাকরিfreelancing বা সুন্দর ক্যারিয়ার বিসর্জন দিয়েছেন—এমন নারীর সংখ্যা কিন্তু কম নয়। তারপর সন্তানের ঝক্কিঝামেলা সামলাতে সামলাতেই জীবন পার। এর মধ্যে নিজেকে ভিন্নভাবে তুলে ধরার কি কোনো সুযোগ থাকে? অবশ্যই থাকে।
সন্তানের জন্য চাকরি ছেড়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল নাজমুন নাহার
upwork আপওয়ার্ক এর মাধ্যমে অনলাইনে আয় শুরু করবেন যেভাবে
তা দেখিয়ে দিয়েছেন বরিশালের নাজমুন নাহার। বয়স আর কত—এই ত্রিশ! চাকরি ছেড়েছেন তো কী হয়েছে? অন্যভাবে, নিজ মহিমায়, দুর্দান্তভাবে আবির্ভূত তিনি। ফ্রিল্যান্সিং freelancing মার্কেটপ্লেসে শীর্ষস্থানীয় ফ্রিল্যান্স freelancing
‘একদিন প্রথম আলোতে নারী ফ্রিল্যান্সারদের freelancing সফলতা নিয়ে প্রকাশিত একটি লেখা মনোযোগ দিয়ে পড়ছিলাম। তখুনি সিদ্ধান্ত নিই এ খাতে চেষ্টা করে দেখব।’
কথাগুলো বলছিলেন নাজমুন নাহার। ওই লেখা থেকে পাওয়া আগ্রহ আজ তাঁকে সফল ফ্রিল্যান্সার freelancing হিসেবে গড়ে তুলেছে। তিনি এখন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে শীর্ষস্থানীয় ফ্রিল্যান্সার।
সংসার ও সন্তান সামলাতে গিয়ে একসময় নিজের চাকরি ছেড়ে দেন নাজমুন। তবে চাকরি ছাড়লেও ভিন্ন পেশায় দুর্দান্তভাবে ফিরে এসেছেন।
স্বামী জাহিদুল ইসলামের ব্যবসার সুবাদে এখন বরিশালের বগুড়া রোডে মুন্সি গ্যারেজ এলাকায় বাস করছেন নাজমুন নাহার। বাড়িতে বসেই এখন ফ্রিল্যান্সিং freelancing করছেন তিনি। যে ছোট মেয়ের জন্য চাকরি ছেড়েছিলেন, তার বয়স এখন ছয় বছর।
নাজমুন ফ্রিল্যান্সিংয়ে freelancing ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০১৫ সালের শেষের দিকে। তখন থাকতেন ঢাকাতেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে। পাস করার পর প্রথম চাকরি শুরু করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। দিতে চেয়েছিলেন বিসিএস পরীক্ষা।
কিন্তু দেড় বছরের মেয়েকে বাসায় রেখে সবকিছু সামলানো আর অফিস করা তাঁর জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই সিদ্ধান্ত নেন চাকরি ছেড়ে দেওয়ার। তবে পেশাজীবনের সমাপ্তিটাও মেনে নিতে পারছিলেন না। এ সময় পাশে দাঁড়ান তাঁর স্বামী। তাঁকে ফ্রিল্যান্সার freelancing হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করতে উৎসাহিত করে।
নাজমুন যখন ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে ব্যস্ত থাকেন, তখন একমাত্র সন্তানের দেখভালেও সহায়তা করেন স্বামী।
স্বামী জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ওকে (নাজমুন) এ কাজে উৎসাহ দিয়েছি। ও যখন রাতে কাজ করে বা মিটিং থাকে, তখন মেয়েকে সামলাই, ঘুম পাড়াই। দিনের বেলা ও ব্যস্ত থাকলে আমি মেয়েকে স্কুলে আনা–নেওয়া করি!freelancing
কাজ নিয়ে দুজনের মধ্যে সমঝোতা থাকায় সংসার সামলাতে কোনো ঝামেলা হয় না; বরং বাড়তি আয় সংসারের স্বচ্ছলতা বাড়ায়।’
ফ্রিল্যান্সিংয়েfreelancing আসার শুরুর গল্প বলতে গিয়ে নাজমুন বলেন, ‘প্রথম আলোসহ অন্যান্য পত্রিকায় ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়েছিলাম এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, এ খাতে চেষ্টা করে দেখব।
নিজেকে আগে দক্ষ করে গড়ে তুলব। নিজেকে দক্ষ করার প্রয়াসে প্রথমে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) বিষয়ে কোর্স করি। এরপর আরও পড়াশোনা শুরু করি।’
নাজমুন জানান, তিনি নানা অনলাইন কোর্স থেকে এসইও বিষয়ে নানা কলাকৌশল রপ্ত করেন। ইউটিউব, গুগলসহ নানা রিসোর্স ব্যবহার করে শেখার পাশাপাশি নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজের জন্য চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ‘তিন মাসের মধ্যে প্রথম কাজটি পাই।
FBS দিচ্ছে $123 বোনাস। নিয়ে নিন এখনই
’ এরপর আর কখনো পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রথম প্রকল্পটিতে কাজ করেন ছয় মাসের বেশি সময়। এর মধ্যে ছোট ছোট অনেক প্রকল্পে কাজ করেন।
এরপর যোগ দেন একটি কানাডীয় মার্কেটিং এজেন্সিতে। সেখানে টানা দুই বছর পূর্ণ সময়ে ভার্চ্যুয়াল টিমের সদস্য হিসেবে কাজ করেন।
নাজমুন নহার বলেন, ‘এরপর টানা প্রায় এক বছর দুটি প্রতিষ্ঠানে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে কাজ করি।’ দুবাইভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানে কাজের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিপটোকারেন্সি এডুকেশন প্ল্যাটফর্মের হয়েও কাজের অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর।
নাজমুন বলেন, ‘ঘণ্টায় মাত্র ৩ মার্কিন ডলার আয়ে কাজ শুরু করেছিলাম, যা এখন প্রায় ২০ ডলারের ওপরে হয়ে গেছে। অনলাইন মার্কেটপ্লেসে টপ রেটেড ফ্রিল্যান্সারদের freelancing মধ্যে প্রথম কয়েক মাসের মধ্যেই জায়গা করে নিতে পেরেছিলাম।
কাজের সফলতার হারও ছিল শতভাগ। ফলে, কাজের জন্য কখনো হাহুতাশ করতে হয়নি।’
তবে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিংয়ের বিষয়টিতে যেহেতু সব সময় নতুন নতুন কৌশল নিয়ে কাজ করতে হয়, তাই এ ক্ষেত্রে নিজেকে হালনাগাদ রাখা জরুরি বলে মনে করেন নাজমুন।
তিনি জানান, এখন মেয়েকে স্কুলে দিয়ে কাজে বসে পড়েন এবং নতুন নতুন বিষয় শেখার জন্য চেষ্টা করেন। রাতেও ক্লায়েন্টের কাজ করে দেন। এতে নিজের দক্ষতা আরও বাড়ে।
নাজমুনের মতে, কাজের পরিধি এখন বেড়ে গেছে। এখন ছোট একটি দল নিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি গড়ে তোলার কাজ করছেন। তাঁর সঙ্গে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের বেশির ভাগই মেয়ে।
এই পেশায় যাঁরা আসতে চান, তাঁদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন—এমন মায়েদের উদ্দেশে নাজমুন বলেন, ‘অনেক মা সন্তানকে দেখাশোনা করার জন্য বিশ্বস্ত কাউকে না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দেন। আবার অনেক মেধাবী ও পরিশ্রমী মেয়ে বিভিন্ন কারণে প্রচলিত চাকরিতে যোগদান করতে পারছেন না বা চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
এসব মা ও নারী নিজেদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ফ্রিল্যন্সার freelancing হিসেবে ঘরে বসেই কাজ করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার কথা ভাবলেই মানুষ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খোঁজ করতে থাকেন। এ ক্ষেত্রে প্রতারণার শিকারও হতে হয়। মনে রাখতে হবে, কোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্রই আপনাকে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে তৈরি করে দেবে না। পড়াশোনা করতে হবে।
প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। কাজ শেখার একাগ্রতা থাকতে হবে। অনলাইনে অনেক রিসো
নাজমুন বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আয়ের নিশ্চয়তা নেই। এটা ভুল ধারণা। আমাদের দেশে এমন অনেকে ফ্রিল্যান্সারfreelancing আছেন, যাঁরা ১০ থেকে ১২ বছর ধরে সম্মানের সঙ্গে কাজ করছেন। প্রচলিত চাকরির থেকে বেশি আয় করছেন।
freelancing ফ্রিল্যান্সিং এ ব্যার্থ হওয়ার কিছু করণ
আপনি যে কাজটি করেন, সেই কাজে যদি আপনি দক্ষ হন, নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে যদি নিজেকে হালনাগাদ রাখতে পারেন এবং কাজের প্রতি ভালোবাসা থাকে, তবে ফ্রিল্যান্সিং freelancing আপনার জন্য ভালো পেশা হতে পারে।’