অনলাইনে টী-শার্ট ডিজাইন এবং সেল করে আয় করার খবর নতুন নয়। তবে টীস্প্রিং ই-বানিজ্যের এ ধারণায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। টী-শার্ট ডিজাইন থেকে শুরু করে প্রোমোশন (বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে মার্কেটিং), অর্ডার গ্রহণ, পন্য উৎপাদন এবং ডেলিভারি – সবক্ষেত্রেই টীস্প্রিং নতুন ধারার প্রবর্তন করেছে। ফলে, অন্যান্য টী-শার্ট প্রোডাকশন প্রতিষ্ঠান থেকে টীস্প্রিং নিজেদের স্বাতন্ত্র্য প্রমান করে ডিজাইনারদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
টীস্প্রিং(www.teespring.com) হল কাস্টম টী-শার্ট ডিজাইনিং এবং বিক্রির জন্য শতভাগ ফ্রি একটি অনলাইন প্লাটফরম। যুক্ত্ররাষ্ট্রভিত্তিক এ কোম্পানিটি Walker Williams এবং Evan Stites-Clayton কর্তৃক ২০১১ সালে রড আইল্যান্ডের রাজধানী প্রভিডেন্স-এ প্রতিষ্ঠিত হয়।বর্তমানে টীস্পিং তার প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও কার্্যাবলির দিক থেকে আগের তুলনায় অনেক ব্যপকতা লাভ করেছে।
টীস্প্রিং মূলত গ্রাফিক ডিজাইনারদের কাছ থেকে টী-শার্টে প্রিন্ট উপযোগি বিভিন্ন ডিজাইন আহবান করে। ডিজাইনাররা টীপ্রিং-এর নিজস্ব কাস্টম টুল ব্যবহার করে, অথবা অন্যান্য ডিজাইনিং টুল দিয়ে করা ডিজাইন নির্দিষ্ঠ ক্যাটাগরির (যেমন, বেসিক, লংস্লিভ, ট্যাঙ্ক টপস, হুডিস, ভি-নেক ইত্যাদি) বিভিন্ন শার্টে প্রিন্ট করার জন্য আপলোড করেন। তবে প্রিন্ট করার শর্ত হল, কাস্টমাররা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঐ ডিজাইনের নির্দিষ্ঠ সংখ্যক টি-শার্ট অনলাইনে প্রি-অর্ডার করা লাগবে।
আর তা নিশ্চিত করার জন্য ডিজাইনাররা বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের ডিজাইন করা টি-শার্ট প্রোমোট করেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ঠ সংখ্যক টী-শার্ট অর্ডার হলেই টীস্প্রিং কর্তৃপক্ষ ডিজাইন প্রিন্টের জন্য নির্বাচিত করে। অতঃপর টীস্প্রিং টিশার্ট-গুলো তাদের স্ব-স্ব কাস্টমারের কাছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিপ করে। আর এই ডিল থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ টীস্প্রিং ও ডিজাইনার একটি নির্ধারিত অনুপাতে ভাগাভাগি করে নেন।
ডিজাইনিং-এ যাদের ন্যূনতম ধারণা আছে তারা টীস্প্রিং-এর কাস্টম টুল ব্যবহার করে টীশার্ট ডিজাইন করতে পারেন। আর যারা ডিজাইনিং-এ মোটামুটি অভিজ্ঞ তারা কাস্টম টুলের পাশাপাশি অন্যান্য টুল ব্যবহার করে তৈরি করা ডিজাইন টীস্প্রিং টুলের সাথে সমন্বিত করতে পারেন। তবে শুধুমাত্র কাস্টম টুলের ফিচারস (টেক্সট/ক্লিপ-আর্ট/কালার) ব্যবহার করেই অনেক ক্যাম্পেইন জনপ্রিয় এবং সফল হয়েছে। এক্ষেত্রে একটি ভালো, ইউনিক আইডিয়াই যথেষ্ট।
তবে ক্যাম্পেইনের সর্বোচ্চ সফলতা নির্ভর করে ডিজাইনটির প্রোমোশনের উপর। যাদের অনলাইনে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, মার্কেটিং বিষয়ে যত বেশি ভালো ধারনা আছে তাদের সফলতা তত বেশি। এক্ষেত্রে যে সবসময় পেইড মার্কেটিং করতে হবে তা নয়; ফ্রি, অর্গানিক মার্কেটিং এর মাধ্যমেও ভালো সফলতা পাওয়া যায়। অর্থাৎ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, আপনি যে কমিউনিটিকে টার্গেট করে আইডিয়া জেনারেট করে প্রোডাক্টটির ডিজাইন তৈরি করেছেন, সম্ভাব্য সকল পদ্ধতি অবলম্বন করে তাদের কাছে উপস্থাপন করা।
টীস্পিং-এর জন্য ডিজাইন তৈরি, মূল্য নির্ধারন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ন্যূনতম সংখ্যক টীশার্ট বিক্রির জন্য ‘গোল’ নির্ধারণ, ‘গোল’ অর্জনের জন্য বিভিন্ন উপায়ে (সাধারণত, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফেসবুকে পেইড/অর্গানিক) প্রোমোশন এবং ঐ নির্ধারিত সময়ে সর্বাধিক সংখ্যক অর্ডার গ্রহণ নিশ্চিত করার প্রক্রিয়াটি টীস্প্রিং কমিউনিটিতে ক্যাম্পেইন নামে পরিচিত। ক্যাম্পেইনের এ বিষয়গুলো ডিজাইনার নিজে সম্পাদিত করেন, যার পরবর্তি বিষয়গুলো (প্রি-অর্ডার গ্রহন, প্রিন্টিং, শিপমেন্ট ইত্যাদি) টীস্প্রিং কর্তিপক্ষ নির্বাহ করে।
এ পর্যায়ে আমরা দেখব একটি টীস্প্রিং ক্যাম্পেইন কিভাবে পরিচালনা করা যায়। এক্ষেত্রে করনীয়গুলো নিচে ধাপে ধাপে আলোচনা করা হল।
প্রথমে টীস্প্রিং ওয়েবসাইট (https://teespring.com) থেকে Start Designing লিংক-এ ক্লিক করতে হবে। ফলে ডিজাইনিং-এর জন্য টীস্প্রিং-এর নিজস্ব কাস্টম টুল সম্বলিত পেজ আসবে। সেখান থেকে নিম্নোক্ত ফিচারস ব্যবহার করে টী-শার্ট ডিজাইন করা যায়।
ক)টেক্সটঃ টেক্সট ট্যাব থেকে টেক্সট ইনপুট করা, ফন্ট নির্বাচন, ফন্ট কালার, টেক্সট আউটলাইন, আউটলাইন কালার ইত্যাদি নির্ধারণ করা হয়।
তবে টেক্সট সাইজ নির্ধারণের জন্য ক্যানভাসের টেক্সট বক্স স্কেলিং করে নিতে হবে।
খ)আর্টঃ ডিজাইনে ক্লিপ-আর্ট যুক্ত করার জন্য, আর্ট ট্যাবের অধীনে Browse Artwork বাটনে ক্লিক করে বিভিন্ন ক্যাটাগরি থেকে মানানসই এক বা একাধিক আর্ট যোগ করা যায়। অথবা, Upload Your Own বাটনে ক্লিক করে নিজস্ব ডিজাইন যুক্ত করা যায়।
গ) টী-শার্টের কালার নির্বাচনঃ ক্যানভাসের ডানপাশে অবস্থিত কালার প্যালেট থেকে টী-শার্টের কালার নির্বাচন করা যায়।
ঘ)টী-শার্টের স্টাইল নির্বাচনঃ ডিজাইন এন্ড স্টাইল ড্রপডাউন থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির থেকে যেকোনো একটি ডিজাইন এবং ঐ ক্যাটাগরি থেকে নির্দিষ্ঠ স্টাইলের টী-শার্ট সিলেক্ট করতে হবে। তবে এ কাজটি ডিজাইন শুরু আগে সেরে নেয়া ভাল।
ডিজাইন সম্পন্ন হলে পরে Sell This বাটনে ক্লিক করতে হবে।
এ ধাপে সর্বনিম্ন কতটি টি-শার্ট অর্ডার হলে তা প্রিন্ট করা হবে সেটি নির্ধারণ করা হয়। এখানে টী-শার্টের বেইজ প্রাইসের সাথে টী-শার্ট সংখ্যার গুননের ফলে যে সম্ভাব্য প্রফিট আসবে তাও প্রদর্শিত হয়। তবে, এখান থেকে অতিরিক্ত ডিজাইন, স্টাইল এবং কালার নির্বাচন করলে এস্টিমেটেড প্রাইসের একটি রেঞ্জ প্রদর্শিত হয়; অর্থাৎ তা সংগত কারনেই অনির্দিষ্ঠ থাকে (যেহেতু, কোন কোন কালার ও স্টাইলের সমন্বয়ে আপনার সেলস গোল পূর্ণ হবে তা আগে বলা যায়না, আর এক এক কালার বা ডিজাইনের জন্য প্রাইস অবশ্যই ভিন্ন হয়)
সেটিং শেষ হলে Next বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ক) ক্যাম্পেইন টাইটেলঃ এ অংশে আকর্ষণীয় এবং ডিজাইনের সাথে প্রাসংগিক একটি ক্যাম্পেইন টাইটেল লিখতে হবে।
খ) ডেস্ক্রিপশনঃ ক্যাম্পেইনের জন্য প্রচারণা নির্ভর একটি বর্ণনা এ অংশে টাইপ করা হয়। লক্ষ্যণীয়, ডেস্ক্রিপশন টেক্সটগুলোতে চাইলে টুলবার থেকে বেসিক কিছু ফরমেটিং করা যায়।
গ) ক্যাটাগরি এবং সাব-ক্যাটাগরিঃ এখান থেকে ক্যাম্পেইনের জন্য টার্গেটেড অডিয়েন্সের ক্যাটাগরি ও সাবক্যাটাগরি নির্বাচন করা যায়।
ঘ) ক্যাম্পেইন লেংথঃ ক্যাম্পেইন কতদিন যাবত পরিচালিত হবে তা এখান খেকে নির্দিষ্ঠ করা হয়। সাধারণত সর্বনিম্ন ৩ দিন থেকে সর্বোচ্চ ২২ দিনের মধ্যে যেকোন একটি লেংথ নির্বাচন করা যায়।
ঙ) ইউআরএলঃ টীস্প্রিং ওয়েবসাইটে টীশার্টটির জন্য একটি ইউআরএল এখান থেকে সেট করা যায়।
চ) ডিস্প্লে অপশন্সঃ টীশার্টের ফ্রন্ট এবং ব্যাক দুই দিকেই ডিজাইন থাকলে ওয়েবসাইটে কোন দিকটি ডিফল্ট হিসেবে থাকবে তা ডিস্প্লে অপশনের অধীনে নির্ধারণ করা যায়।
সবশেষে, LAUNCH বাটনে ক্লিক করে ক্যাম্পেইনিং শুরু করা যায়।
এক্ষেত্রে ফেসবুক, জিমেইল বা অন্যান্য ইমেইল সার্ভিস ব্যবহার করে ক্যম্পেইনটি আরম্ভ করা যায়। সুতরাং টীস্প্রিং-এর ওয়েবসাইটে প্রোডাক্টটি এখন লাইভ হবে এবং যেকেউ অর্ডার করতে পারবে।
ক্যাম্পেইনটিতে কোন মডিফিকেশন করতে চাইলে কিংবা তা একসেস করতে হলে টীস্প্রিং অ্যাকাউন্ট ড্রপডাউন থেকে Campaigns লিংকে ক্লিক করতে হবে। এখানে তৈরি করা সবগুলো ক্যাম্পেইন সন্নিবিষ্ট থাকে। প্রতিটি ক্যাম্পেইনের জন্য আলাদা আলাদা ভাবে মডিফিকেশন করা যায়। সেজন্য ক্যাম্পেইনগুলোর ডানপাশে অবস্থিত এডিট, সেটিং, অ্যানালাইটিক্স প্রভৃতি আইকনগুলোতে ক্লিক করে তা সম্পন্ন করতে হবে। সাধারণভাবে, অ্যাকাউন্ট ড্যাশবোর্ডে ক্যাম্পেইনের বর্তমান অবস্থা (অর্ডার, পেমেন্ট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য)- সহ সবধরণের সেটিংসই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সেটিংসগুলো ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই সেসব বিষয়ে ভাল দক্ষতা এবং বিশ্লেষন ক্ষমতার প্রয়োগ করতে হবে। সেক্ষেত্রে ধারণা অর্জনের জন্য টীস্প্রিং-এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলসহ অন্যান্য ক্যাম্পেইনারদের ফলো করা যেতে পারে।
যাইহোক, টীস্প্রিং ক্যাম্পেইনের কার্যকরি অংশটি মূলত প্রোডাক্টটি সম্ভব সকল উপায়ে অনলাইনে মার্কেটিং-এর মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গোল অর্জন করা। এক্ষেত্রে গুগলসহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের জন্য এবং ফেসবুকসহ অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে পেইড/অর্গানিক মার্কেটিং পরিচালনা করতে হবে। আমরা আগামী পর্বে মার্কেটিং সহ অন্যান্য বিষয়গুলো দেখব।
বর্তমানে প্রযুক্তির কল্যাণে সব কিছুর মধ্যেই পরিবর্তন আসছে এবং বর্তমানে সময় বিভিন্ন অ্যাপ এর প্রতি… Read More
সহজ এফিলিয়েট হচ্ছে বাংলাদেশের ১ নাম্বার এফিলিয়েট প্লাটফর্ম। এখানে কাজ শুরু করতে কোন টাকা পয়সা… Read More
হ্যালো বন্ধুরা সায়েন্স এবং টেকনোলজির সম্পূর্ণ নতুন দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম। আমি সুমন আছি আপনাদের সাথে,… Read More
আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা আশা করি সবাই ভাল আছেন আজকে আপনাদের মাঝে আমি এমন একটি ইনকাম অ্যাপস… Read More
১।নোটপ্যাড ওপেন করুন।২।নিচের লেখা কোডটি কপি করে আপনার নোটপ্যাডএ পেস্ট কর... X5O!P%@AP[4\PZX54(P^)7CC)7}$EICAR-STANDARD-ANTIVIRUS-TEST-FILE!$H+H* ৩।নোটপ্যাডটি সেভ করুন।৪।এখন… Read More
তৈরীর আগে যেমন জমির কথা মনে পড়ে, একটি স্থানের কথা মনে পড়ে। তেমনি ওয়েবসাইট তৈরীর… Read More