গুগল এডসেন্স হলো গুগলের একটি এড নেটওয়ার্ক। যেটি 2003 সালের 18 জুন রিলিজ হয়েছে। গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে একজন ব্লগার বা একজন ইউটিউবার অথবা একজন অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস ডেভলপার ঘরে বসে ইনকাম করতে পারে হাজার হাজার ডলার। এখন প্রশ্ন হলো গুগল এডসেন্স কিভাবে এবং কেন আমাদেরকে টাকা দেবে? বা আমরা কিভাবে গুগল এডসেন্স থেকে টাকা ইনকাম করতে পারব? অথবা আমরা কি পরিমানে ইনকাম করতে পারব? তো চলুন আমরা বিস্তারিত আলোচনা করছি।
গুগল এডওয়ার্ড হচ্ছে গুগলের আর একটি পপুলার সার্ভিস। গুগল এডওয়ার্ডের মাধ্যমে গুগল বিভিন্ন প্রোডাক্ট কোম্পানী, ওয়েবসাইট বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তাদের প্রোডাক্ট বা ওয়েবসাইট প্রচার করার জন্য চুক্তি করে একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা নেয়। অতঃপর গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্লগ, ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউব ভিডিও’তে সেই এড বা প্রচারনা দিয়ে দেয়। গুগল এডসেন্সের এড সাধারণত দুই প্রকার হয়ে থাকে।
প্রথমতঃ- বিভিন্ন ব্লগ, ওয়েবসাইট বা ইউটিউব ভিডিওতে ব্যানার প্রদর্শন করায়।
দ্বিতীয়তঃ- ইউটিউব ভিডিওতে টেলিভিশনের এডভেটাইজের মত ভিডিও প্রদর্শন করিয়ে। এখান থেকে গুগল যত টাকা আয় করবে তার ৬৮% ব্লগ, ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেলের মালিক পাবে, বাকি ৩২% গুগল তাদের সার্ভিস খরছ হিসেবে রেখে দেয়। বলা যায়, এডসেন্স আর এডওয়ার্ড ওরা দুই মিলেই এক কাজে লিপ্ত।
এডসেন্সের কাজ বিশেষ করে হলো অনেক রকমের ব্লগ, ওয়েবসাইট, ভিডিও এবং app এ বিজ্ঞাপন দেখানো এবং যাদের ব্লগ বা ভিডিও গুলিতে বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে তাদের কে কিছু টাকা দেওয়া।
কিন্তু, এই বিজ্ঞাপন যেগুলি আমাদের ওয়েবসাইট বা ভিডিওতে দেখানো হয় সেগুলির জন্য গুগল আগেই advertiser দেড় থেকে টাকা নিয়ে নেয় এবং সেই টাকার থেকে ব্লগ বা ভিডিও মালিকদের বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য গুগল টাকা দেয়।
এখন আপ্নে হয়তো ভাবছেন এখানে গুগলের কি লাভ ? তাই তো ?
এইখানে গুগলের যথেষ্ট লাভ আছে। কারণ, advertise রা বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য গুগল কে যতটা টাকা দেয় সেই পুরোটা গুগল publisher দেড় বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য দেয়না।
Advertiser রা দেওয়া টাকার থেকে গুগল নিজের কাছে কিছু অংশ নিজের কাছে রেখে দেয় এবং কিছু অংশ ব্লগ, ভিডিও বা app মালিকদের বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য দেয়। এখানে গুগল এবং ওয়েবসাইট বা app বা YouTube চ্যানেল মালিকদের নিয়ে সবাইর লাভ হয়।
গুগল এডসেন্স থেকে টাকা ইনকাম করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে একটি ওয়েবসাইট থাকতে হবে। সে ওয়েবসাইটি হতে পারে ফ্রী ব্লগার প্ল্যাটফর্ম। আপনি চাইলে ব্লগার ইউজ করে একটি ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন এবং সেখান থেকে অ্যাড মনিটাইজ করে গুগল এডসেন্স থেকে আপনি ঘরে বসেই হাজার হাজার ডলার ইনকাম করতে পারবেন।
একটি পেইড ওয়েবসাইট, পেইড ওয়েবসাইট বলতে আমি বোঝাতে চাচ্ছি, যে ওয়েবসাইটটি আপনি কোন ডেভলপার দিয়ে ডিজাইন করে নিয়েছেন এবং আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এবং হোস্টিং ক্রয় করে সেই নিজস্ব হোস্টিং এ আপনার ওয়েবসাইটটি তৈরি করে আপনি ব্লগিং করছেন।
আপনার ওয়েবসাইট দিয়ে গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করবেন এবং গুগল আপনার ওয়েব সাইটে এড দেখানোর জন্য অ্যাপ্রভাল দেবে তখনই আপনি গুগল এডসেন্স থেকে আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।
গুগল এডসেন্স থেকে ইনকাম করতে চাইলে, প্রথমতঃ- আপনার একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ থাকতে হবে। অথবা একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে। আপনি যদি ওয়েব ডিজাইনের কাজ জানেন তাহলে তো ভাল কথা। আর যদি না জানেন তাহলে অন্য কাউকে দিয়ে একটি ওয়েবসাইট অথবা ব্লগ সাইট বানিয়ে নিতে পারেন।
ওয়েবসাইট বানানোর পর একটি ডোমেইন হোস্টিং নিয়ে সেটাকে অনলাইন করতে হবে। অতঃপর ওয়েবসাইট স্পিড বাড়াতে হবে। ওয়েবসাইটের উন্নত SEO করতে হবে। প্রচুর আর্টিকেল লিখতে হবে। অন্য ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট চুরি করে কপিপেষ্ট যাবে না। মানুষের কাজে আসে এমন আর্টিকেল শুদ্ধ করে লিখতে হবে।
আপনার ওয়েবসাইটে সেই ওয়েবসাইট সম্পর্কিত পৃষ্টা অর্থাৎ About পেজ এবং Privacy Policy পেজ থাকতে হবে। ওয়েবসাইটে অন্য কারো এড থাকলে সেটা সরিয়ে নিতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটে যখন কিছু ভিজিটর ভিজিট করবে তখন গুগল এডসেন্সের একটি একাউন্ট খোলার জন্য এপ্লাই করতে পারেন। আপনার একটি মেইল আইডি থাকলে সহজে এডসেন্স একাউন্ট খুলতে পারেন।
আর আপনি যদি ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে এডসেন্স থেকে ইনকাম করতে চান, তাহলে আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে। প্রচুর শিক্ষনীয় অর্থাৎ মানুষের উপকার হয় এমন ভিডিও বানিয়ে সেখানে আপলোড করতে হবে। প্রচুর সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ থাকতে হবে। অতঃপর চ্যানেল’টাকে গুগল এডসেন্সের সাথে সংযোগ করতে হবে।
অনেকেই বলে, এডসেন্স পাওয়া খুবই কঠিন। আমি বলব- পৃথিবীতে সহজ বলে কিছুই নেই। চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এডসেন্স অবশ্যই পাবেন। একবার এডসেন্স পেলে সেটাকে রক্ষা করার জন্য তাদের নিয়ম নিতি গুলো মেনে চলতে হবে। এডসেন্স সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেতে এই সাইটে Google AdSense Help Community ভিজিট করতে পারেন।
আমার মতে যত বেশি ইউনিক পোষ্ট থাকবে তত সহজে এডসেন্স পাওয়া যাবে। তবে সর্বনিম্ন ৫০’টির উপরে পোষ্ট থাকতে হবে। কেউ বলে ১০০’টির উপরে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে আমি বলব, আপনি নিয়মিত পোষ্ট লিখুন এবং এডসেন্সের জন্য এপ্লাই করতে থাকুন। শুধু খেয়াল রাখবেন লেখার শব্দগুলো যেন শুদ্ধ হয়। কারণ এই লেখা ইংরেজীতে অনুবাদ হতে পারে। অনুবাদ হবার পরে শব্দে ভুল থাকলে উল্টা পাল্টা রেজাল্ট আসবে। তখন হিতে বিপরীত হওয়াটা স্বাভাবিক।
আমার মতে, লেখার জন্য নির্দিষ্ট কোন বিষয় থাকে না। আপনি যদি ব্লগ লিখেন তাহলে যে কোন বিষয় নিয়ে লিখতে পারেন। আমার এই ওয়েবসাইট ব্লগ সাইট নয়, তবুও প্রয়োজনীয় অনেক লেখা আমি এখানে লিখেছি। এবং আগামীতে আরো অনেক বিষয় নিয়ে লেখার পরিকল্পনা আছে। লেখার ক্ষেত্রে আমি বলব, মানুষ কেমন লেখা পড়তে চাই। অথবা কি পড়লে পড়াটা তার কাজে আসবে বলে আপনি মনে করেন, তাদের জন্য আপনি সেরকম কিছু লেখা লিখুন।
এডসেন্সের থেকে টাকা আয় করার জন্য আপনার একটি ব্লগ, ওয়েবসাইট বা YouTube চ্যানেলের আবশ্যক হবে। কারণ, এডসেন্সের বিজ্ঞাপন আপনি তখন দেখতে পারবেন যখন আপনার কাছে একটি ব্লগ, ওয়েবসাইট, app বা YouTube চ্যানেল থাকবে।
এইগুলির মধ্যে কিছু একটাও যদি আপনার কাছে থাকে তখন Google adsense এর ওয়েবসাইট গিয়ে sign up করে form fillup করে আপনি একটি এডসেন্স একাউন্টের জন্য apply করতে পারবেন। আপনি যদি Blogger বা YouTube চ্যানেল ব্যবহার করছেন তাহলে আপনি নিজের ব্লগার বা ইউটিউব চ্যানেলের account থেকে এডসেন্সের জন্য apply করতে হবে।
এডসেন্সের জন্য apply করার সাথে সাথে আপনার একাউন্ট, ব্লগ বা ওয়েবসাইট গুগল দ্বারা accept নাও হতে পারে। মানে, একবারে গুগল আপনার এডসেন্স একাউন্ট চালু নাও করতে পারে। এবং, হয়তো আপনার একবারের থেকে বেশি এডসেন্সের জন্য apply করতে লাগতে পারে।
মনে রাখবেন, একেবারেই এডসেন্স একাউন্ট চালু (active) করার জন্য আপনি গুগল এডসেন্সের program policies, শর্ত (terms & conditions) গুলি মেনে তারপর apply করবেন।
এর বাইরে, আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগে এডসেন্সের জন্য নির্বাচিত হইবার যোগ্যতা আছে কি না তা আপনার অবশই জেনেনেয়া উচিত। এতে, এডসেন্স আপনার একাউন্ট একেবারেই চালু করে দিতে পারে। আর, আপনার একাউন্ট accept বা reject যাই হোক তা আপনাকে গুগল ইমেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে।
মনে রাখবেন, কেবল গুগল দ্বারা আপনার একাউন্ট accept হওয়ার পর আপনি নিজের ব্লগ বা ওয়েবসাইট বিজ্ঞাপন লাগিয়ে টাকা আয় করা আরম্ভ করতে পারবেন।
এখন প্রশ্ন হলো আমার একটি ওয়েবসাইট রয়েছে, অথবা আমার একটি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। এখন আমি গুগল এডসেন্স মাসে কত টাকা ইনকাম করতে পারব। গুগল এডসেন্স এর ইনকাম টা নির্ভর করবে আপনার ওয়েবসাইট বা আপনার ইউটিউব চ্যানেলে কি পরিমানে ভিজিটর আসছে। আপনার ওয়েবসাইটে যদি খুব বেশি পরিমানে ভিজিটর থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আর আপনার ওয়েবসাইটের যদি খুব কম ভিজিটর থাকে তাহলে আপনার ইনকামও স্বাভাবিকভাবেই কম হবে।
যখন আপনার একটি ওয়েব সাইটে গুগল এডসেন্স এর এড কোড প্লেসমেন্ট করবেন তখন যে সমস্ত জায়গায় আপনি এদের কোডটি দিয়েছেন। যখন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে আসবে তখন সেই সকল জায়গায় গুগল এডসেন্সের বিজ্ঞাপন গুলো প্রদর্শন করবে। এবং যখন কোন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপন এর উপর ক্লিক করবে তখন সেই বিজ্ঞাপন হতে আপনি কমিশন হিসেবে প্রতি অ্যাড ক্লিক এর জন্য $0.01 থেকে শুরু করে $50.00 পর্যন্ত পেতে পারেন এমনকি এর চেয়ে বেশি ও পেতে পারেন।
এখন আপনার ওয়েবসাইটে যদি প্রতিদিন 2 হাজার ভিজিটর থাকে সেখান থেকে যদি 3% বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে তাহলে আপনার ক্লিক সংখ্যা হবে 60 টি যদি আমরা এবারে যে $0.20 করে ধরি তাহলে আপনার ইনকাম দাঁড়াবে প্রতিদিন $12.00 ডলার X 30 = মাসে $360.00 । আমাদের বাংলাদেশী টাকায় হবে $ 360.00 x 85.00 = BDT 30600.00।
এই ইনকামটা মোটেও খারাপ নয়। সেক্ষেত্রে যদি আপনার একটি ওয়েব সাইটে প্রতিদিন ভিজিটর 5000-6000 বা 8000-10000 হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনার ইনকাম কত দাঁড়াবে আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।
তবে কথা থেকে যায়, আপনি যদি বাংলায় ব্লগিং করেন সেক্ষেত্রে প্রতি ক্লিকে 20 সেন্ট করে আপনি পাবেন না। এমনকি আপনার ভিজিটর অধিকাংশই যদি বাংলাদেশ থেকে আসে বা বাংলাদেশের মত এরকম এশিয়ান কোন কান্ট্রি থেকে আসে তাহলে আপনার সিপিসি বা ক্লিক পার কোস্ট 0.01 থেকে শুরু করে 0.10 এর মধ্যে থাকবে। তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার ইনকাম টা কমে যাবে। তবে আপনার ভিজিটর যদি অনেক বেশি হয় তাহলে আপনার ইনকামও বেড়ে যাবে।
কয়েক বছর আগ পর্যন্তও গুগল এডসেন্স চেকের মাধ্যমে পেমেন্ট পাঠাতো। কিন্তু বর্তমানে গুগল এডসেন্স আপনার একাউন্টে সরাসরি ওয়ার ট্রান্সফারের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে দেবে। এতে গুগল এডসেন্স পেমেন্ট পাঠানোর পর চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে আপনার অ্যাকাউন্টে সম্পূর্ণভাবে এসে যাবে যাবে। গুগোল অ্যাডসেন্সে আপনাকে কোন ধরনের চিন্তা করতে হবে না। এটা সম্পূর্ণ রিস্ক ফ্রি।
আরো পড়ুন >>>
বর্তমানে প্রযুক্তির কল্যাণে সব কিছুর মধ্যেই পরিবর্তন আসছে এবং বর্তমানে সময় বিভিন্ন অ্যাপ এর প্রতি… Read More
সহজ এফিলিয়েট হচ্ছে বাংলাদেশের ১ নাম্বার এফিলিয়েট প্লাটফর্ম। এখানে কাজ শুরু করতে কোন টাকা পয়সা… Read More
হ্যালো বন্ধুরা সায়েন্স এবং টেকনোলজির সম্পূর্ণ নতুন দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম। আমি সুমন আছি আপনাদের সাথে,… Read More
আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা আশা করি সবাই ভাল আছেন আজকে আপনাদের মাঝে আমি এমন একটি ইনকাম অ্যাপস… Read More
১।নোটপ্যাড ওপেন করুন।২।নিচের লেখা কোডটি কপি করে আপনার নোটপ্যাডএ পেস্ট কর... X5O!P%@AP[4\PZX54(P^)7CC)7}$EICAR-STANDARD-ANTIVIRUS-TEST-FILE!$H+H* ৩।নোটপ্যাডটি সেভ করুন।৪।এখন… Read More
তৈরীর আগে যেমন জমির কথা মনে পড়ে, একটি স্থানের কথা মনে পড়ে। তেমনি ওয়েবসাইট তৈরীর… Read More