গতানুগতিক চাকরির বাইরেও এমন অনেক পেশা আছে যেখানে ভালোভাবে উপার্জন ও সম্মান আদায় করা সম্ভব। এরকমই একটি পেশা হলো ফটোগ্রাফি। এখানে নিজের দক্ষতার পাশাপাশি শৈল্পিক জ্ঞানের সমন্বয়ে যে কেউ গড়তে পারেন উজ্জ্বল ভবিষ্যত। পড়ালেখা শেষ করে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই গতানুগতিক পেশার পেছনে ছুটে থাকেন। এদের মধ্যে কেউ চাকরি করে প্রতিষ্ঠিত হন, আবার কেউ বা বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকেন। তাদের জন্য চাকরির বাইরে ফটোগ্রাফির মতো পেশা হয়ে উঠতে পারে সফল ক্যারিয়ারের চাবিকাঠি।
ফটোগ্রাফি নিয়ে এখন অনেকেই ক্যারিয়ার গড়তে চান। তবে ক্যামেরা এখন সহজলভ্য এবং অনেকেই এই পেশায় ঝুঁকে পড়ার কারণে এই ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতাও তৈরি হয়েছে। তাই এই পেশায় টিকে থাকতে হলে আপনার মধ্যে থাকতে হবে সৃজনশীলতা। মাথায় রাখতে হবে—শুধু ক্যামেরা থাকলেই ফটোগ্রাফার হওয়া যায় না। এর জন্য প্রয়োজন পড়ালেখা, অধ্যাবস্যায়; থাকতে হবে প্রকৃতিতে ভিন্নভাবে দেখার অভ্যাস ও ক্ষমতা।
ফটোগ্রাফির প্রকারভেদ :
ফটোগ্রাফির নানা ভাগ রয়েছে। পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফি, ফটো ডকুমেন্টারি, ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি, নেচার ফটোগ্রাফি,স্পোর্টস ফটোগ্রাফি,ট্রাভেল ফটোগ্রাফি, ফ্যাশন ফটোগ্রাফি—এমন নানা ভাগ রয়েছে। আপনার নিজের দক্ষতা ও আগ্রহ অনুযায়ী বেছে নিন এর মধ্যেকার কোনোটি। তবে পেশাদার হিসেবে সব ধরনের ফটোগ্রাফিতেই কাজ করার সুযোগ উন্মুক্ত রাখুন। তাতে করে আপনার কাজের পরিধি বাড়বে, কাজের সুযোগও পাবেন বেশি।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফি সোসাইটির প্রেসিডেন্ট আকরাম হোসেইন বলেন, ‘প্রফেশন হিসেবে ফটোগ্রাফি অতীতে অনেকটাই হাসির বস্তু ছিল। কিন্তু দিন দিন এটি একটি স্মার্ট প্রফেশনে পরিণত হচ্ছে। ফটোগ্রাফিরর সেক্টরটা আসলে এখন অনেক বড়। ফটোজার্নালিজম, ডকুমেন্টারি ফটোগ্রাফি, ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফটোগ্রাফি প্রভৃতি সব সেক্টরেই রয়েছে সম্ভাবনা। তবে যেকোনো ক্ষেত্রেই ভালো করতে হলে ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়ালেখা করতে হবে।
ফটোগ্রাফার হওয়ার জন্য যা প্রয়োজন :
ফটোগ্রাফার হওয়ার জন্য প্রথমে যেই জিনিষটা খুব বেশি দরকার তাহলো একটা সুন্দর আর সৃজনশীল চিন্তাভাবনা। আর তারপরে যা প্রয়োজন তাহলো অনেকবেশী অনুশীলন আর এরপরে হয়ত বলা যেতে পারে একটা ভালো ক্যামেরার কথা ! কাজেই যদি একজন প্রফেশনাল মানের ফটোগ্রাফার হওয়ার সত্তি ইচ্ছা থাকে তাহলে প্রথমে একটা সাধারণ মানের কম্প্যাক্ট ক্যামেরা দিয়ে সিয়েই শুরু করা ভালো এইভাবে ১ বছরের মত সময়ই ব্যয় করা যেতে পারে আপনার নিজের হাত এর উপর একটা দক্ষতা গড়ে তুলতে আর সর্বশেষে হয়ত একটা ভালো মানের DSLR ক্যামেরা ব্যবহার করে দেখতে পারেন ! মোদ্দা কথা এর জন্য প্রথমেই চাই অনেকবেশী ইচ্ছা আর অনুশীলন।
১। একটি ভাল ক্যামেরাঃ
ফটোগ্রাফির মুল উপকরন একটি ভাল ক্যামেরা। আর সাধারনত প্রথমবার ক্যামেরা কেনার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক কনফিউশন থাকে আর অনেকেই ভুল করে এমন কোন ক্যামেরা কিনে ফেলি যেগুলো হয়তো আমাদের কোন কাজেই আসে না। তাই সঠিক ক্যামেরাটা বাছাই করা খুব প্রয়োজন। আর এজন্য দরকার হলে কারো সাহায্য নেয়াতেও পিছুপা উচিৎ হবে না। তাদেরই সাহায্য যারা ইতিমধ্যে ক্যামেরা কেনার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।
আর অনলাইনে আছে নানা রকম রিভিউ। বাজেটের মধ্যে কোন ক্যামেরা কেন ভাল, কোনটা দিয়ে কি করা যায়, কোন লেন্সটা ভাল এসব যাচাই বাছাই করেই ক্যামেরা কেনা উচিৎ। এমনও করতে পারেন, যদি কোন বন্ধুর কাছ থেকে বা কারো কাছ থেকে ক্যামেরা ধার করতে পারেন কয়েকদিনের জন্য, তাহলে, নিজে ক্যামেরা কেনার আগে ধার করা ক্যামেরাটা ব্যবহার করে দেখুন। তাহলে কিছু আইডিয়া আপনার মাথায় চলে আসবে। সব ক্যামেরাই ভাল না আর সব মডেলের ক্যামেরাই সব ফিচার থাকে না। ক্যামেরা কেনার আগে ক্যামেরা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাটা খুব জরুরী।
ক্যামেরার সঙ্গে থাকুন: আপনার ক্যামেরা সকল ব্যবহার উত্তম রূপে অবগত হোন। কোন মেন্যু দিয়ে কী হয়, কোন অপশনটির কাজ কী কোনটিই যেন বাকি না থাকে আর সব সময় সাথে রাখুন ক্যামেরা।
ফটোগ্রাফির টেকনিকগুলো জানুন: যতটা সম্ভব ফটোগ্রাফির টেকনিকগুলো শিখুন। পয়েন্ট, শট, ক্যামেরা ইত্যাদি সম্পর্কে যতটা পারেন জ্ঞান অর্জন করতে থাকুন।
২ । ম্যানুয়াল মোডে ছবি তুলতে শিখুন :
ম্যানুয়াল মোডে ছবি তুলতে জানা সব পেশাদার আলোকচিত্রীর প্রথম এবং প্রধান কাজ। আপনি নিজের মতো করে ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এটা নিশ্চিত করা খুব জরুরী। ম্যানুয়াল মোডে ক্যামেরা চালাতে গেলে প্রথম প্রথম খুব কঠিন মনে হতে পারে, কিন্তু আপনি যখন সত্যিই ক্যামেরায় যথার্থ আলো নিয়ন্ত্রণ করে ছবি ক্যাপচার করার সঠিক উপায় বুঝে যাবেন তখন প্রতিটি ফ্রেমের উপর সম্পূর্ণ সৃজনশীল নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবেন।ভালো লাইটিং এবং ফোকাসিং শিখে গেলে অত্যন্ত জটিল আলোক পরিস্থিতিও ছবি তোলার উপযুক্ত করে নিতে পারবেন, যা ক্যামেরার অটো মোড করতে পারে না। ম্যানুয়াল মোড আলোকচিত্রীকে বাধ্য করে জানতে যে, তার লেন্সে ঠিক কী ঘটছে, যা একজন আলোকচিত্রীকে পরিপূর্ণ করে তোলে।
৩। নিজের এবং নিজের কাজ সম্বন্ধে জানুন :
পরবর্তী পদক্ষেপ হলো আপনার নিজস্ব স্টাইল ও কাজের ক্ষেত্র নির্ধারণ করা যা নান্দনিকভাবে আপনার ধ্যান ধারণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এমন ভাবে নিজের ফটোগ্রাফি ক্ষেত্র খুঁজে বের করুন যা হবে আপনার প্রথম ও কাজ সূচনাকালীন পোর্টফোলিও। তবে মনে রাখতে হবে সময় পার হওয়ার সাথে সাথে আপনার কাজের ব্যপ্তি ও পরিপক্কতার উপর ভিত্তি করে পোর্টফোলিও প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হবে। তাই কি ধরণের ফটোগ্রাফি আপনার সবচেয়ে বেশি ভাল লাগে, সাথে সাথে তা আপনার ব্যক্তিত্বের সাথে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং কাজের তৃপ্তির জন্য আপনি ফটোগ্রাফিতে ঠিক কী তুলে ধরতে চান তা খুঁজে বের করুন।এই কাজটি সবার আগে করতে হবে। নিজের ক্ষেত্র নির্ধারণ না করলে আপনি কোনো কাজেই তৃপ্তি খুঁজে পাবেন না। তবে ক্ষেত্র নির্ধারণ করার পর নিশ্চিত করতে হবে আপনি সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সাথে এবং জেনে বুঝে কাজ করছেন। তবে সবচেয়ে ভালো হয় আপনি আজই ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন আর কিছু বাস্তব ক্যামেরা অভিজ্ঞতা অর্জন করুন এবং নিজের কাজ নিয়ে প্রচুর গবেষণা করুন, যা আপনার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
৪। বেসিক ফটোগ্রাফিঃ
ফটোগ্রাফির কিছু বেসিক আছে এবং ফটোগ্রাফি প্র্যাকটিস শুরু করার আগে এসব বেসিক ব্যাপারগুলো আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে। যেমন কম্পোজিশন, লাইটিং, ফোকাসিং, সাবজেক্ট, ব্যাকগ্রাউন্ড, ডেপথ অব ফিল্ড, ফ্রেমিং – ইত্যাদি ব্যাপারগুলো নিজেই নিজেই আয়ত্ত করে নিতে পারেন। অনলাইনে নানা ওয়েবসাইটে আছে হাজারো টিপস। টেক সাইটেও আছে অনেক ধরনের ফটোগ্রাফি টিউটোরিয়ালস। এগুলোরও সাহায্য নিতে পারেন। শেখার আগে প্র্যাকটিসে না গিয়ে এসব বেসিক ব্যাপারগুলো জেনে নিয়ে এরপর শুরু করলেই ভাল। < a=” টিউটোরিয়াল” > https://www.youtube.com/watch?v=2qkcYx1bX74 </a>
৫ । এডিট বা ছবি সম্পাদনা করা শিখুন: আপনি বেসিক সফটওয়্যার থেকে সম্পাদনার অনেক কিছুই শিখতে পারবেন। কমপক্ষে আপনি ফটোশপের মত সফটওয়্যার থেকে সম্পাদনা বেসিক শিক্ষা নিতে পারবেন। https://www.wix.com/
৬। প্রস্তুত থাকুন সবসময়ঃ
ভাল ছবি তোলার সবচেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ন অংশ হলো সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় থাকা আর তার চাইতে বড় ব্যাপার হলো সে জায়গায় হাতে ক্যামেরা নিয়ে রেডি থাকা। নিজের ক্যামারাটি সবসময় বহন করার চেষ্টা করুন আর ব্যবহার করুন। নানা রকম শট নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করুন। শুধু বহন করলেই হবে না।
৭। সেরাটি দেখানঃ
সারাদিনে হয়তো শত শত ছবি তুলতে পারেন কিন্তু সবাইকে দেখানোর সময় শুধু নিজের সেরা কাজটাই দেখান। ফেসবুকে ঘন ঘন ছবি আপলোড না করে চিন্তা ভাবনা করে ছবি শেয়ার করুন। আর ফটোগ্রাফি সাইটগুলো যেমন ফ্লিকার বা 500px এসব জায়গায় কোন ভাবে সব ধরনের ছবি শেয়ার করবেন না। দরকার হলে মাসে একটা করে ছবি শেয়ার করুন এবং সেরাটা করুন।
এমন ছবি শেয়ার করুন যে ছবি আপনি অনেক চিন্তা ভাবনা করে একটা অর্থ ফুটিয়ে তোলার জন্য তুলেছেন। যা তুলেন তাই শেয়ার করলে একসময় আপনার ছবিগুলো সস্তা হয়ে যেতে পারে আর তার চাইতেও বড় কথা শত সাধারন ছবির মাঝে অসাধারন ছবিগুলো হারিয়ে যাবে, কেউ টেরই পাবে না। সুতারাং এই ব্যাপারটা মাথায় রাখুন যদি নিজের ছবি দিয়ে সবাইকে তাক লাগাতে চান।
৮। Photography Community :
যুক্ত থাকুন অন্যান্য ফটোগ্রাফারদের সাথে। অন্যান্য সমমনা ফটোগ্রাফারদের সাথে ফটো-ওয়াকে বের হোন। সময় নিয়ে তাদের কথা শুনুন। তাদের স্টাইলগুলো নীরবে দেখার চেষ্টা করুন। এরপর নিজেই একটা ট্রেন্ড বানানোর চেষ্টা করুন। কারন লক্ষ ছবির মাঝে আপনার ছবিটি আলাদা হবেই একভাবেই – সেখানে যদি থেকে থাকে আপনার নিজস্ব কোন স্টাইল বা ট্রেন্ড।
এ ক্ষেত্রে অনালাইন মিডিয়ার সাহায্য নিতে পারেন ফটোগ্রাফি ওয়েবসাইট যেমন :https://www.photovisi.com/, https://web.500px.com/ , https://photoshop.com/
DSLR ফটোগ্রাফির জন্য লাইটরুম | ফ্রি ফটোগ্রাফি কোর্স!
আপনার পেশাকে উন্নত করুন: আপনাকে ভাবতে হবে পেশা হিসেবে ফটোগ্রাফিকে কতদূর এগিয়ে নিতে পারলেন। আপনাকে পেশাদার ফটোগ্রাফার হতে হবে। পেশাকে দিনকে দিন এগিয়ে নিতে হবে। ক্যামেরা নিয়ে আপনার কাজ হবে একদম সময় নিয়ন্ত্রণ করে। দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক সবই হবে নির্দিষ্ট সময় মেনে। এক্ষেত্রে অনিয়ম করা চলবে না। গুছিয়ে কাজ করুন। নিজেকে চ্যালেঞ্জ করুন- আপনি পারবেন। সব কাটিয়ে আপনি আপনার পেশাকে এগিয়ে নেবেন। সব সময়ই ফটোগ্রাফিকে আনন্দের সঙ্গে নিবেন। বিরক্ত হবেন না, ধৈর্য্য হারাবেন না। দেখুন কত আনন্দ এই সৃজনশীল কাজটির মাঝে।
বর্তমানে প্রযুক্তির কল্যাণে সব কিছুর মধ্যেই পরিবর্তন আসছে এবং বর্তমানে সময় বিভিন্ন অ্যাপ এর প্রতি… Read More
সহজ এফিলিয়েট হচ্ছে বাংলাদেশের ১ নাম্বার এফিলিয়েট প্লাটফর্ম। এখানে কাজ শুরু করতে কোন টাকা পয়সা… Read More
হ্যালো বন্ধুরা সায়েন্স এবং টেকনোলজির সম্পূর্ণ নতুন দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম। আমি সুমন আছি আপনাদের সাথে,… Read More
আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা আশা করি সবাই ভাল আছেন আজকে আপনাদের মাঝে আমি এমন একটি ইনকাম অ্যাপস… Read More
১।নোটপ্যাড ওপেন করুন।২।নিচের লেখা কোডটি কপি করে আপনার নোটপ্যাডএ পেস্ট কর... X5O!P%@AP[4\PZX54(P^)7CC)7}$EICAR-STANDARD-ANTIVIRUS-TEST-FILE!$H+H* ৩।নোটপ্যাডটি সেভ করুন।৪।এখন… Read More
তৈরীর আগে যেমন জমির কথা মনে পড়ে, একটি স্থানের কথা মনে পড়ে। তেমনি ওয়েবসাইট তৈরীর… Read More