ডিজিটাল মার্কেটিং কি? কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করব?

সাধারণত “মার্কেটিং কি?” সেটা আমরা সবাই জানি। আমরা পৃথিবীতে বাস করছি ডিজিটাল প্রযুক্তির মাঝে। আর বর্তমান সময়ে সবথেকে জনপ্রিয় মাধ্যম হল ইন্টারনেট ভিত্তিক মার্কেটিং যার নাম দেয়া হয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং। সেই হিসেবে আমাদের ব্যবসাও অবশ্যই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে করতে হবে। আমরা তুলনামুলক কম খরচে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে কাজ করতে পারি।

ডিজিটাল মার্কেটিং হল ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে পণ্য বা ব্র্যান্ডের প্রচারকে বোঝায়। ডিজিটাল মার্কেটিং ইলেকট্রনিক মাধ্যমের মাধ্যমে বিতরণ করা সমস্ত বিজ্ঞাপনের একটি বৃহত্তর শব্দ। ইন্টারনেট ডিজিটাল মার্কেটিং এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। লোকেরা যখন ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে শুনে এবং কথা বলে, তখন এটা সত্য যে তাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন ধরনের ইন্টারনেট মাধ্যম সম্পর্কে চিন্তা করে। যেমন, ইমেইল, সামাজিক মিডিয়া, ওয়েবসাইট, এবং সার্চ ইঞ্জিন। মূলত, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ ইত্যাদির মাধ্যমে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত যে কোনও কিছু। ডিজিটাল মার্কেটিং অনলাইন ও অফলাইন উভয়ভাবেই হতে পারে। ডিজিটাল মার্কেটিং অনলাইন এবং অফলাইন উভয়ভাবেই করা যায় এবং, উভয় ধরনই একটি ভাল মসৃণ ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সহজ অর্থে ডিজিটাল প্রযুক্তি (ইন্টারনেট সেবা) ব্যবহার করে কোন পণ্য বা সেবার মার্কেটিং করা হয় তাকে ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing) বলে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্তর্ভুক্ত

১. সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO)

2. সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM)

3. কনটেন্ট মার্কেটিং

4. ইন্টারেক্টিভ মার্কেটিং

5. ইনফ্লুয়েন্স মার্কেটিং

6. বিপণন প্রচারাভিযান

7. ডিজিটাল ডিসপ্লে বিজ্ঞাপন

8. পুনঃলক্ষ্য স্থির এবং পুনঃমার্কেটিং

9. ডেটা-চালিত মার্কেটিং

10. ভাইরাল মার্কেটিং

11. ই-কমার্স মার্কেটিং

12. সামাজিক মিডিয়া মার্কেটিং

13. ইমেল মার্কেটিং

14. পডকাস্ট বিজ্ঞাপন

15. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

16. বিজ্ঞাপন প্রদর্শন

17. ই-বুক

18. অপটিক্যাল ডিস্ক

19. গেম

20. মোবাইল মার্কেটিং

21. কলব্যাক

22. ওয়েব এনালাইটিক্স।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

 Search Engine Optimization এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে SEO । সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান বা SEO এর বাংলায় সংজ্ঞা দিলে বলা যায়, SEO হল এমন কিছু নিয়মনীতি/টেকনিক যার মাধ্যমে কোন একটা ওয়েবসাইট বিভিন্ন ধরনের সার্চ ইঞ্জিন (Google, Yahoo, Bing etc.) থেকে বেশি পরিমাণে ভিজিটর পেতে পারে। আর এই বেশি পরিমান ভিজিটর আনার একমাত্র কারন হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন গুলোর প্রথম পেজ এ আমাদের ওয়েব সাইট কে আনা। আর যখন আমাদের ওয়েব সাইট সার্চ ইঞ্জিন গুলোর প্রথম পেজ এ চলে আসে তখন স্বয়ংক্রিয় ভাবেই আমাদের ওয়েবসাইট এর ভিজিটর বাড়তে থাকে।

মূলত আমাদের ওয়েবসাইট এর Google, Yahoo, Bing etc. বা অন্য কোন সার্চ ইঞ্জিন অনুসন্ধান করে প্রাপ্ত ফলাফলগুলি পর্যালোচনা করে থাকে। আজকের প্রতিযোগিতার বাজারে পণ্যের মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে SEO এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে। SEO এর মাধ্যমে আমাদের পণ্যকে গুগল সার্চের সবচাইতে উপরে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে আমাদের পণ্যের বিক্রিও বৃদ্ধি পাবে কারন বর্তমানে মানুষ কোন পণ্য কেনার আগে গুগল থেকে সার্চ দিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। গুগল তার তথ্য গুলো নিয়মিত আপডেট করে। SEO কে সাধারণত ২ ভাগে ভাগ করা যায়।

আমরা আমাদের ওয়েবসাইট সম্পর্কে যা বলেছি তা হচ্ছে On Page SEO, এটিকে Technical SEO ও বলে। আর অন্যরা আমাদের ওয়েবসাইট সম্পর্কে যা বলছে তা হলো Off Page SEO, এটিকে Link Building ও বলে। ধরা যাক আমরা একটা প্রোডাক্ট সম্পর্কে অথবা প্রোডাক্ট এর নাম লিখে যে কোন সার্চ ইঞ্জিন এ সার্চ করলাম। তখন প্রথম পেজ এ যে ওয়েবসাইট গুলো আসবে বুজতে হবে সেগুলোতেই আমার সার্চ করা প্রোডাক্ট টি রয়েছে। আমরা কোন একটা নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করলাম। এখন আমাদের ওয়েবসাইট এ আছে, এমন কোন প্রোডাক্ট বা ইনফর্মেশন লিখে কেউ সার্চ করলে আমাদের ওয়েবসাইট টি সার্চ ইঞ্জিন এর ১০ নং পেজ আসে, তখন কেউ তো আর ধরেই প্রোডাক্ট টি খোঁজার জন্য ১০ নং পেজে যাবে না। অবশ্যই ১ নং পেজটিই আগে দেখবে। আর এজন্য আমাদের ওয়েবসাইট এর ট্র্যাফিক/ভিজিটর বাড়াতে হবে আর Search Engine Optimization এর সঠিক পদ্ধতি গুলো অনুসরন করতে হবে।

  1. সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM)

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা SEM হচ্ছে ইন্টারনেট বিপণনের একটি রূপ, যা প্রাথমিকভাবে অর্থ প্রদানের মাধ্যমে আমাদের ব্যবসায়িক ওয়েব সাইটের ভিজিটর বাড়িয়ে থাকে। তাকে আমরা Paid সার্চ মার্কেটিং ও বলে থাকি। ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতামূলক মার্কেটপ্লেসে আপনার ব্যবসায় বৃদ্ধির অন্যতম কার্যকর উপায় সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং, বা SEM । আমাদের ব্যবসার গঠনশৈলীর উপর ভিত্তি করে সাধারনত এ ধরনের মার্কেটিং করা হয়।

বিজ্ঞাপনদাতারা কীওয়ার্ডগুলিতে বিড করেন যে গুগল এবং বিংয়ের মতো পরিষেবার ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট পণ্য বা পরিষেবা সন্ধানের সময় প্রবেশ করতে পারে, যা বিজ্ঞাপনদাতাকে তাদের অনুসন্ধানের জন্য ফলাফলগুলির পাশাপাশি ফলাফল প্রদর্শন করার সুযোগ দেয়। এক্ষেত্রে কোন PPC (পে-পার-ক্লিক) অথবা CPC (কস্ট পার ক্লিক) মডেল বা CPM (কস্ট পার থাউজ্যান্ড ইমপ্রেশন) মডেল নির্বাচন করা যায়। SEM সাধারনত বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের হয়ে থাকে। যেমন-গুগুলের AdWords এবং বিং বিজ্ঞপ্তি (গুগল নেটওয়ার্কে), ইয়াহু বিং নেটওয়ার্ক সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এছাড়াও SEM বিজ্ঞাপন অনুসন্ধান, মোবাইল মার্কেটিং, পুনঃবাজারজাতকরণের এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। SEM বর্তমান অনলাইন মার্কেটিং এর সব চেয়ে সাশ্রয়ী অনলাইন মার্কেটিং যা কিনা আমাদের রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট বাড়াতে পারে। অনুসন্ধান ইঞ্জিন বিপণনের সর্বাধিক শক্তি হচ্ছে এটি বিজ্ঞাপনদাতাদের তাদের বিজ্ঞাপনগুলি প্রেরণাদিত গ্রাহকদের সামনে রাখার সুযোগ দেয় যা তারা ক্রয়ের জন্য প্রস্তুত অবিকল মুহূর্তে কিনতে প্রস্তুত। অন্য কোনও বিজ্ঞাপনের মাধ্যম এটি করতে পারে না, এ কারণেই অনুসন্ধান ইঞ্জিন বিপণন এত কার্যকর এবং আপনার ব্যবসাকে বাড়ানোর মতো আশ্চর্যজনক শক্তিশালী উপায়।

2. কন্টেন্ট সৃষ্টি করা

কনটেন্ট রাইটিং এমন এক ধরণের কাজ যা কোন পেজ বা কোন পন্য বা কোন বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করে থাকে। এটাকে আরটিকেল রাইটিংও বলা হয়ে থাকে। যেমন আপনি যদি ইন্টারনেটে কোন বিষয় নিয়ে সার্চ করেন তাহলে ফলাফল হিসেবে যে বিবরণগুলো পান সেগুলোই কনটেন্ট। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে আরটিকেল লিখা হয়। ব্লগ আরটিকেল ছাড়াও প্রোডাক্টের রিভিউ, সেলস পেজ, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য রিসোর্স বই, ব্রশিউর, লিফলেট বা অন্যান্য প্রচারনার কাজে রাইটারদের আরটিকেল লিখার প্রয়োজন হয়।

অনলাইনে আমাদের কনটেন্ট, যেকোন পোস্ট কিংবা ফোরাম ডিসকাশনে যাতে আমাদের টার্গেটেড কিওয়ার্ডের উপস্থিতি থাকে যাতে খুব সহজে আমাদের টার্গেটেড পাঠক আমাদেরকে খুঁজে পেতে পারেন। প্রত্যেকদিন নির্দিষ্ট সময় পর পর মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্ট গুলোকে আপডেট করা উচিৎ। সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট পোস্ট করার ক্ষেত্রে অটোমেটিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করা উচিৎ। আমাদের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের জন্য বিষয়বস্তু কাস্টমাইজ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, মোবাইল ফোনের জন্য বিষয়বস্তু সহজ এবং সংক্ষিপ্ত হতে হবে। “একটি কার্যকর কৌশল আমাদের পাঠকদের জন্য তৈরি করতে হবে এবং তারা আমাদের কাছ থেকে আরো তথ্য জানতে আগ্রহী হবে”। একটি ভাল কন্টেন্ট ভাগ করা এবং আমাদের ব্যবসা ব্র্যান্ডিং এর জন্য সবচেয়ে ভাল উপায়।

3. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বর্তমানে সব থেকে বেশি জনপ্রিয় মার্কেটিং। আমাদের ব্যবসায়িক পণ্যের প্রচারের জন্য এর চাইতে ভাল জায়গা, একটাও নাই। সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলতে আমরা ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, লিঙ্কডিন, পিন্টারেস্ট, গুগল প্লাস এই গুলোকেই বেশি বুঝে থাকি। বর্তমান জগতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মধ্যে ফেসবুক আর ইউটিউব অনেক অনেক বেশি কার্যকরী এবং ফলপ্রসূ। মার্কেটিং প্লেসগুলোতে যতগুলো মার্কেটিং আছে তার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া সব থেকে বেশি কার্যকরী ও ফলপ্রসূ। আমরা যদি আমাদের ক্যারিয়ার হিসাবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বেছে নেই তাহলে হয়ত সামনের পথ চলা আমাদের জন্য অনেক বেশি সহজ হয়ে যাবে। কেননা আমাদের ব্যাবসার প্রচার প্রচারণা চালাতে বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া সব থেকে বেশি প্রয়োজন।


আমাদের অনেকেরই ধারণা ছিল যে, ওয়েবসাইট এর জন্য SEO খুবি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কোন প্রোডাক্ট ওয়েবসাইট এ অ্যাড করে ঠিক মত SEO করলে সাথে সাথে গুগল এ রাঙ্ক করতো। কিন্ত এটা পুরোপুরি ঠিক নয়। এতে করে দেখা যায় যে, এই রেজাল্ট টা হয়ত Google এর প্রথম পেজে কিছুদিন থাকবে। কিন্ত লম্বা সময় অবস্থান করবে না। তাই আপনাকে অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া তে কাজ করতে হবে। একটা সময় যখন আপনি সোশ্যাল মিডিয়া তে কাজ করবেন তখন আপনার পোস্ট গুলোতে অনেক অনেক ভিউ আসবে। সমগ্র পৃথিবী এখন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর উপর নির্ভরশীল। আপনি একটু ছিন্তা করে দেখুন না, আপনি লাস্ট কবে ফেসবুক বা ইউটিউব ব্যবহার করেন নি। তাহলে খুব সহজেই বুঝতে পারবেন এটার গুরুত্ব কতখানি।


সারা পৃথিবীতে অনেক গুলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং আছে। তার মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু দেশে নির্দিষ্ট কিছু সোশ্যাল মিডিয়া খুব বেশি কার্যকর। যেমন- ইন্ডিয়াতে ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটস অ্যাপ, ইমো, ভাইবার এই সোশ্যাল মিডিয়া খুব বেশি জনপ্রিয়। আবার আমেরিকাতে পিন্টেরেস্ট ও রেদ্দিট অনেক বেশি জনপ্রিয়, রাশিয়াতে ভিকে, স্তাম্বলআপন ও টুইটার অনেক বেশি জনপ্রিয়। ঠিক তেমনই বাংলদেশে ফেসবুক, ইউটিউব এই গুলো অনেক জনপ্রিয়। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সবসময় কার্যকর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন মানুষের কার্যকলাপের উপর। আমার ফেসবুক এর মাধ্যমে যে মার্কেটিং করি তা ফেসবুক মার্কেটিং এর অন্তগত। ঠিক একইভাবে ইউটিউবে আমরা যে ভিডিও শেয়ার করে বা পোস্ট করে যে মার্কেটিং করি তা ইউটিউব মার্কেটিং এর অন্তগত।


একটি এ্যাক্টিভ কমিউনিটি তৈরি করতে হবে। এমনভাবে একটি কমিউনটি তৈরি করতে হবে যেখানে সকল মেম্বার এ্যাক্টিভ থাকবে। সকল সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয়ভাবে নিয়মিত অংশগ্রহণের জন্য ম্যানেজমেন্টটুলস (HootSuite, TweetDeck) ব্যবহার করতে পারি যা আমাদের সময়কে সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে ভাল ফলাফল বের করতে সাহায্য করবে। নিয়মিত পোস্ট দিতে হবে। সেটা একটা রুটিন অনুযায়ী করলে ভাল হয়ে। যেমন, ৩ দিন পর, ১ সপ্তাহ পর। তাহলে নিয়মিত ভিজিটর আসবে নতুন কিছু পাবার আশায়।


4. মোবাইল মার্কেটিং


এসএমএস(SMS) মার্কেটিং, এমএমএস(MMS) মার্কেটিং, ব্লুটুথ মার্কেটিং, ইনফ্রারেড মার্কেটিং এর মাধ্যমে মোবাইল মার্কেটিং করা হয়। আর এগুলোর মধ্যে “SMS FOR MOBILE” মার্কেটিং পদ্ধতিটি খুবই গুরুতুপূর্ণ। এর প্রধান কারন-

  • পৃথিবীতে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪.১ বিলিয়ন।
  • ৮৬% আমেরিকানই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে।
  • ৩ মিনিটে মোট ফোন ব্যবহারকারীর ৯৭% টেক্সট মেসেজ ওপেন হয়ে থাকে।
  • প্রতি সেকেন্ডে ৫২০৮৩ টি টেক্সট মেসেজ আদান প্রদান হয়ে থাকে।
  • ২৫% আন্তর্জাতিক মিডিয়া এবং মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ তাদের প্রতিষ্ঠানের সমস্যাগুলো মোবাইলের মাধ্যমে সমাধান করে থাকে।
  • ৭০% মোবাইল ব্যবহারকারীরা তাদের কেনাকাটার জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকে।


আমরা ভার্চুয়াল জগৎ এর, ডিজিটাল যুগের মানুষ। আমাদের ফেসবুক, টুইটারে অনেক ফলোয়ার আছে। তাদেরকে আমরা মেসেজ অথবা টুইট করতে পারি আমাদের keyword গুলো। হয়তো তারাও SMS এর মাধ্যমে আমাদের প্রোডাক্টের সাবস্ক্রাইবার হতে পারে। যারা আমাদের প্রডাক্টের নিয়মিত সাবস্ক্রাইবার হয়েছে তাদেরকে আমরা আমাদের প্রোডাক্ট সম্পর্কিত বিবরণের মেসেজ পাঠাতে পারি। মেসেজ হবে সংক্ষিপ্ত, to-the–point এ এবং ১৬০ ওয়ার্ডের বেশী নয়। মেসেজ হবে ফ্রেণ্ডলি যাতে সাবস্ক্রাইবার এমন মনে না করে যে আমরা আমাদের কোম্পানীর প্রোডাক্ট কেনার জন্য তাকে প্ররোচিত করছি। এই মার্কেটিং পদ্ধতিটি খুবই ফ্লেক্সিবল এবং এটি টাকা তৈরীর টুল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

5. ভাইরাল মার্কেটিং


আমরা যেই সেক্টরেই থাকি না কেন, আমাদের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের সাফল্যে ভাইরাল মার্কেটিং ও কনটেন্টের গুরুত্ব বলে হয়তো শেষ করা যাবেনা। প্রথমেই জেনে নেয়া যাক আমাদের কি লাভ রয়েছে ভাইরাল কনটেন্ট সম্পর্কে জেনে। লাভ অবশ্যই রয়েছে। যেমনটি একটু আগেই বলেছি, যেকোন ধরণের ব্যাবসার জন্যেই কোনও কনটেন্ট ভাইরাল করতে পারা মানে নিশ্চিত লাভ! আর যদি আমাদের ব্যাবসায়ের মডেলটিই হয় ইন্টারনেটকে ঘিরে, তাহলে তো কথাই নেই! ধরুন আমাদের একটি ইকমার্স শপ রয়েছে যেখানে আমরা ছেলেদের টিশার্ট বিক্রি করি।

একটি ভাইরাল ভিডিও আমাদের ব্র্যান্ডকে সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে যেমন পরিচয় করিয়ে দিবে, তেমনি পুরনো ক্রেতার মস্তিষ্কেরও উপরিভাগে আমাদের প্রতিষ্ঠানের নামটিকে অক্ষত রাখতে সহায়তা করবে। যত বেশি সংক্রামক আমাদের কনটেন্ট, তত বেশি ‘ওয়ার্ড অফ মাউথ’ মার্কেটিং। অর্থাৎ একটি ভাইরাল কনটেন্ট তৈরী করতে পারা মানেই লাভের পাল্লা ভারী। ছবি বা লেখাকে প্রোমোট করতে আমাদের আর তেমন খাটনি করার প্রয়োজন হবে না। মানুষই ভাইরাসের মত কনটেন্টটি ছড়িয়ে দেবে। এই ধরণের কনটেন্ট তৈরী ও প্রকাশ করার পরে আমাদের কাজটি হল তার দিকে নজড় রাখা, যেমন ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি প্রায় সকল সোশাল মিডিয়াতেই ইনসাইট বা এ্যানালিটিকস রয়েছে যা দিয়ে আমরা একটি কনটেন্ট কতোটা ভালো পারফর্ম করছে বা না করলে কি সমস্যার কারণে করছে না ইত্যাদি জানতে হবে। সব শেষে, একটি কথা না বললেই নয়! তা হল ভালো কনটেন্ট তৈরী করতে হবে। ক্যাপশান, পোস্ট করার সময়, প্রিভিউ ইমেজ ইত্যাদির উপরেও অনেকাংশে ভাইরালিটি নির্ভর করে।

6. ইমেইল মার্কেটিং


যেই প্রক্রিয়ার দ্বারা নিজের বিসনেস (business), পণ্য (product) বা যেকোনো সার্ভিস (service), অফার (offer), প্রমোশন (promotion), প্রচার বা মার্কেটিং আমরা ইমেইল (e-mail) এর মাধ্যমে করি, সেই মার্কেটিং এর প্রক্রিয়াকেই “email marketing” বলা হয়। এবং, এটি digital marketing বা internet marketing এর একটি অনেক বিখ্যাত মাধ্যম। একটি কার্যকর ইমেইল মার্কেটিং সফটওয়্যার দিয়ে আমাদের ই-মেইল লিস্ট গ্রাহকদের পছন্দ এবং অপছন্দ এবং খরচ অভ্যাস সহ বিভিন্ন কারণের উপর ভিত্তি করে আলাদা করে বজায় রাখতে পারি।

ইমেইল মার্কেটিং হচ্ছে একটি অনলাইন মার্কেটিং পদ্ধতি যার মাধ্যমে আমাদের পন্যের এবং সেবার প্রচার করতে পারি এবং আমাদের সাইটের প্রচার করতে পারি। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ছোট বড় অসংখ্য প্রতিষ্ঠান এই পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের আয় বৃদ্ধি করছে। ইমেইল মার্কেটিং হল আমাদের ক্রেতাদের কাছে আমাদের পণ্যের তথ্য পৌছানোর সবচাইতে কাযকরী পদ্ধতি। ইমেইল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আমাদের যা ভাবতে হবে- বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বয়সের কিংবা বিভিন্ন ক্যাটাগরির মানুষের মেইল এড্রেস জোগাড় করতে হবে, যে পণ্যের মার্কেটিং করতে চাই, সেটি নিয়ে ভালভাবে গবেষণা করতে হবে, অন্য কোম্পানীর একই পণ্যকে নিয়ে ও তাদের মার্কেটিং কৌশল নিয়ে গবেষণা করা জরুরী, সবচাইতে সহজভাবে আমাদের পণ্যের গুণ বর্ণনা করতে হবে আমাদের মেইলে। ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য প্রয়োজন একটি ওয়েবসাইট, মার্কেটিং টুলস এবং পন্য বা সেবা। ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে মুহূর্তেই আমরা আমাদের পণ্য এবং সেবা কে হাজার হাজার গ্রাহকের কাছে তুলে ধরতে পারব এবং এতে করে আমাদের পন্যটি জনপ্রিয় হতে থাকবে। ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আমাদের পণ্য অধিক পরিমানে বিক্রি হতে থাকবে ।


7. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং


অনলাইনে আয়ের অন্যতম জনপ্রিয় উপায় হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। আমরা যখন আমাদের ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিল টা ব্যাবহার করে অন্য কারও প্রডাক্ট অথবা সার্ভিস কমিশন ভিত্তিক প্রমোশন করব সেটা হবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন কোন বিষয় নয় যেখানে আমরা রাতারাতি খুব বেশি কিছু করে ফেলতে পারবো। ধৈর্যসহকারে সময় ও শ্রম দিলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে সফলতা অর্জন করা সম্ভব।

8. ওয়েব এনালাইটিক্স


আমাদের ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক Web Analytics. মূলত, ওয়েব এনালাইটিক্স সংগ্রহ করা, পরিমাপ, বুঝতে, বিশ্লেষণ, পরিকল্পনা, রিপোর্ট করা এবং আমাদের ব্যবসার জন্য ওয়েব কার্যক্রম এর ভবিষ্যত পরিকল্পনা করতে আমাদেরকে সাহায্য করবে। ওয়েব এনালাইটিক্স ওয়েব পরিসংখ্যান সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ওয়েব এনালাইটিক্স হচ্ছে গুগল এনালাইটিক্স, স্প্রিং মেট্রিক্স, অপেরা, প্রিন্ট। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে প্রত্যেক বিজ্ঞাপনদাতা তার ব্যবসা বুঝতে ওয়েব এনালাইটিক্স ব্যবহার করা হয়।


এটা গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা আমাদের ব্যবসার জন্য বিভিন্ন মার্কেটিং কৌশল ব্যবহার করতে পারি এবং এর মধ্যে থেকে আমাদেরকে বেছে নিতে হবে কোন কৌশলটি ব্যবহার করলে বেশি লাভবান হব। ডিজিটাল মার্কেটিং একটি গতিশীল মাধ্যম এবং আমরা সবসময় আমাদের কাজের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তন করতে পারব। আমরা আমাদের গ্রাহকদের জানি এটাই যথেষ্ট নয়। কোম্পানীর পণ্যের প্রসারের জন্য আমরা বিভিন্নভাবে মার্কেটিং করি

যেমনঃ লিফলেট, পোস্টার ইত্যাদি। বর্তমানে ডিজিটাল যুগ। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে সবচাইতে বেশি মানুষের কাছে পণ্যের প্রচার করা যায়, এবং ডিজিটাল মার্কেটিংয়েই সবচাইতে বেশি ব্যবসায়িক সফলতা পাওয়া যায়। অনেক ধরণের ব্যবসা আছে যে গুলো গড়েই উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংকে কেন্দ্র করে। খুব সহজে ক্রেতার কাছে পৌঁছানো যায় বলে, অনলাইন ব্যবসায়ীদের জন্য তো অবশ্যই।

Rakibul Hafiz

I am a Digital Marketer

Recent Posts

WhatsApp এ আসতে চলেছে চ্যাট জিপিটি এর মত চ্যাট বট!!

বর্তমানে প্রযুক্তির কল্যাণে সব কিছুর মধ্যেই পরিবর্তন আসছে এবং বর্তমানে সময় বিভিন্ন অ্যাপ এর প্রতি… Read More

9 months ago

সহজ এফিলিয়েটস থেকে মাসে আয় করুন ২,৩৫,০০০ টাকা

সহজ এফিলিয়েট হচ্ছে বাংলাদেশের ১ নাম্বার এফিলিয়েট প্লাটফর্ম। এখানে কাজ শুরু করতে কোন টাকা পয়সা… Read More

2 years ago

৫ টি গ্যাজেট যা অবাক করে দিয়েছে পুরো পৃথিবীকে

হ্যালো বন্ধুরা সায়েন্স এবং টেকনোলজির সম্পূর্ণ নতুন দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম। আমি সুমন আছি আপনাদের সাথে,… Read More

3 years ago

প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা ইনকামের রিয়াল একটি সাইট।

আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা আশা করি সবাই ভাল আছেন আজকে আপনাদের মাঝে আমি এমন একটি ইনকাম অ্যাপস… Read More

3 years ago

আপনার এ্যান্টিভাইরাস কাজ করে কি না চেক করুন খুব সহজেই

১।নোটপ্যাড ওপেন করুন।২।নিচের লেখা কোডটি কপি করে আপনার নোটপ্যাডএ পেস্ট কর... X5O!P%@AP[4\PZX54(P^)7CC)7}$EICAR-STANDARD-ANTIVIRUS-TEST-FILE!$H+H* ৩।নোটপ্যাডটি সেভ করুন।৪।এখন… Read More

3 years ago

ডোমেন কিনুন সহজে আর পেমেন্ট করুন বিকাশে

 তৈরীর আগে যেমন জমির কথা মনে পড়ে, একটি স্থানের কথা মনে পড়ে। তেমনি ওয়েবসাইট তৈরীর… Read More

3 years ago