আজকাল পথেঘাটে, রেস্টুরেন্টে এবং বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে ফ্রি ওয়াইফাই পাওয়া যায়। দুর্মূল্যের এই যুগে মোবাইল ডেটার যে দাম, তাতে একটুখানি কচ্ছপগতির ফ্রি ওয়াইফাইও অনেকের জন্য অমৃত সমতুল্য। কিন্তু এই অমৃতের মধ্যেও যে গরল থাকতে পারে, তা কখনো ভেবে দেখেছেন? হ্যাঁ, ফ্রি ওয়াইফাই আপনার গোপন তথ্য চুরি করে নিতে পারে, এমনকি অনলাইন একাউন্ট হ্যাকও করতে পারে। কিন্তু তাই বলে কি আমরা ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করবনা? অবশ্যই করব, নিচের নিরাপত্তা টিপসগুলো মেনে তবেই।
চলুন জেনে নিই ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যপালনীয় কিছু নিরাপত্তা কৌশল।
অনলাইন ব্যাংকিং থেকে বিরত থাকুন
বাস ষ্টেশনে কিংবা রেস্টুরেন্টের মধ্যে ফ্রি ওয়াইফাই যেনো মরুভূমির বুকে এক বোতল ঠাণ্ডা মিনারেল ওয়াটার, তাইনা? কিন্তু একটু ধীরে আগাতে হবে। ফ্রি ওয়াইফাই অনেকসময় ফাঁদও হতে পারে। ফ্রি ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে কখনোই অনলাইন ব্যাংকিং কিংবা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড নম্বর ব্যবহার করে কোনো অনলাইন ট্র্যানজেকশন করবেন না। কারণ, ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে যদি কোনো দুর্বৃত্তকারী থাকে, তবে তারা আপনার ব্যাংক বা কার্ডের তথ্য নিয়ে আপনার ব্যাংক একাউন্ট খালি করে দিতে পারে।
ভিপিএন ব্যবহার করুন
ভিপিএন হচ্ছে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক, যার মাধ্যমে আপনি আলাদা আইপি এড্রেসের মাধ্যমে যেকোনো ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারবেন। ফলে ফ্রি ওয়াইফাইয়ের পাবলিক আইপি এড্রেস আপনার দরকার হবেনা। এটা আপনার ব্যক্তিগত তথ্যকেও নিরাপদ রাখবে।
নেটওয়ার্ক সেইভ করবেন না
মোবাইল ডিভাইস এবং কম্পিউটার অনেক সময় তাদের সাথে সংযুক্ত ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের নাম সংরক্ষণ করে রাখে এবং পরবর্তীতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেগুলোর সাথে যুক্ত হয়। এই কাজটি কখনোই করবেন না। কারণ, দুষ্কৃতিকারীরা অনেকসময় ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পটের নাম নকল করে আপনার ডিভাইসের সাথে অটো-কানেক্টেড হতে পারে এবং নিজস্ব এক্সেস পয়েন্টের মাধ্যমে আপনার প্রাইভেসির বারোটা বাজিয়ে দিতে সক্ষম।
নেটওয়ার্কের নাম খেয়াল করুন
অনেক সময় জনপ্রিয় কোনো ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পটের আশেপাশে দুর্বৃত্তরা কাছাকাছি নামের অন্য কোনো ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পট খুলে ফাঁদ পাতে। তাই এই ফাঁদ থেকে বাঁচতে নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার আগে এর নাম সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিন!
অথেনটিকেশন
কিছু কিছু ফ্রি ওয়াইফাই হটস্পটে যুক্ত হতে হলে ফোন নাম্বার দিতে হয় এবং এরপর এসএমএসের মাধ্যমে ফোনে একটি পাসওয়ার্ড/কোড আসে যেটা দিয়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে হয়। এরকম নেটওয়ার্ক অপেক্ষাকৃত নিরাপদ, কেননা হ্যাকাররা সাধারণত এত আয়োজন নিয়ে বসে থাকেনা। তারা হয়ত এমন নেটওয়ার্ক দেবে যেটাতে যুক্ত হতে কোনো কোড বা পাসওয়ার্ডের দরকারই হয়না।
এন্টিভাইরাস অ্যাপ
ডিজিটাল নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে নিত্যনতুন পন্থা বের হচ্ছে। এগুলো মোকাবেলা করার জন্যও আছে অনেক উপায়। আপনি যদি একটি এন্টিভাইরাস ব্যবহার করেন, তাহলে অনিরাপদ নেটওয়ার্কে সেটি আপনার জন্য ঢাল হিসেবে কাজ করতে পারে।
অপ্রয়োজনে ওয়াইফাই চালু না রাখা
আপনি যদি ইন্টারনেট ব্যবহার না করেন, তবে ফোনের ওয়াইফাই বন্ধ করে রাখুন। এতে ব্যাটারি চার্জ বাঁচবে। এছাড়া প্রতারণামূলক অটো-কানেক্ট নেটওয়ার্কের হাত থেকেও রেহাই মিলবে।
আশা করি এই টিপসগুলো আপনার কাজে লাগবে। আপনার মতামত ও পরামর্শ কমেন্টে জানানোর আমন্ত্রণ রইল।