সোজা ভাবে বললে, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM) হলো এমন এক টেকনিক বা প্রক্রিয়া, যেখানে বিভিন্ন আলাদা আলাদা Social Media Platform যেমন, Facebook, YouTube, Instagram, LinkedIn এবং আরো অন্যান্য প্লাটফর্ম গুলিতে সক্রিয় থাকা লোকেদের লক্ষ্য (target) করে, পণ্যের গুণমান সচেতনতা (product brand awareness) ছড়ানো হয় বা বিভিন্ন product, service এবং business এর প্রচার (marketing) করা হয়।
এই মার্কেটিং এর প্রক্রিয়াতে অনলাইন বা ইন্টারনেটে সক্রিয় থাকা অসংখক লোকেদের টার্গেট (target) করা হয়। এবং তাই, একে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সব থেকে সেরা মাধ্যম হিসেবে ধরা হয়। ডিজিটাল মার্কেটিং কি, এ ব্যপারে আমি আগেই আলোচনা করেছি।
Social media advertisement এর মাধ্যমে, আমরা যেকোনো ব্র্যান্ড, জিনিস বা সার্ভিস, বিশ্বের যেকোনো জায়গায় অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রমোশন বা প্রচার করতে পারব। কেননা, ইন্টারনেট ব্যবহার করা লোকেদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে, লোকেরা এই সোশ্যাল মিডিয়া সাইট বা এপস গুলিও অধিক পরিমানে ব্যবহার করছেন।
Social media advertisement হলো এমন এক প্রক্রিয়া, যেখানে আমরা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলিতে আমাদের পণ্যের সাথে জড়িত বিজ্ঞাপন চালিয়ে এক ধরণের পেইড মার্কেটিং (paid marketing) এর প্রক্রিয়া চালাই।
আমরা যদি একজন businessman হই, তাহলে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যম ব্যবহার করে নিজেদের product বা service বা যেকোনো ব্যবসার প্রমোশন (promotion) অনেক সহজে ঘরে বসেই যেকোনো জায়গা, শহর, দেশ বা আমাদের আসে পাশের জায়গাতে করতে পারব। সবটাই আমাদের স্মার্টফোনের দাড়াই সম্ভব।
তাছাড়া, আমাদের পণ্যের (product) জন্য ঘরে বসে বসে গ্রাহক (consumer) পেয়ে যাওয়ার সুযোগ অনেক বেশি বেড়ে যায়।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে আমরা হয়ত কম-বেশি সবাই অবগত আছি। সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলতে আমরা ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, লিঙ্কডিন, পিন্টারেস্ট, গুগল প্লাস এই গুলাকেই বেশি বুঝে থাকি। বর্তমান জগতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মধ্যে ফেসবুক আর ইউটিউব অনেক অনেক বেশি কার্যকরী এবং ফলপ্রসূ। সারা পৃথিবীতে অনেক গুলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং আছে। তার মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু দেশে নির্দিষ্ট কিছু সোশ্যাল মিডিয়া খুব বেশি কার্যকর। যেমন- ইন্ডিয়াতে ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটস অ্যাপ, ইমো, ভাইবার এই সোশ্যাল মিডিয়া খুব বেশি জনপ্রিয়। আবার আমেরিকাতে পিন্টেরেস্ট ও রেদ্দিট অনেক বেশি জনপ্রিয়, রাশিয়াতে ভিকে, স্তাম্বলআপন ও টুইটার অনেক বেশি জনপ্রিয়। ঠিক তেমনই বাংলদেশে ফেসবুক, ইউটিউব এই গুলো অনেক জনপ্রিয়। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সবসময় কার্যকর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন মানুষের কার্যকলাপের উপর। আমার ফেসবুক এর মাধ্যমে যে মার্কেটিং করি তা ফেসবুক মার্কেটিং এর অন্তগত। ঠিক একইভাবে ইউটিউবে আমরা যে ভিডিও শেয়ার করে বা পোস্ট করে যে মার্কেটিং করি তা ইউটিউব মার্কেটিং এর অন্তগত।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কেন প্রয়োজন?
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বর্তমান সময়ের জন্য সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা একটা সময় মানুষ টেলিভিশন দেখে বিনোদন নিতো, সংবাদ দেখত, খেলা দেখত। এই সব কিছুর জন্য টেলিভিশনই ছিল তাদের একমাত্র ভরসা। এর জন্য আমাদের সব সময় টেলিভিশন এর সামনে বসে থাকতে হত অথবা দেখা যেত টেলিভিশন এর নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের অপেক্ষা করতে হত। কিন্ত এখন সময়টা পাল্টেছে, আমরা এখন চাইলে যেকোনো সংবাদ, বিনোদন, খেলাধুলা এই সব নিউজ দেখতে ও পরতে পারি খুব সহজে এবং যখন তখন। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে। আমরা চাইলে এই গুরুত্ব টাকেই কাজে লাগিয়ে মার্কেটিং করতে পারি। আমরা আমাদের ওয়েবসাইট এর প্রোডাক্ট গুলো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া তে শেয়ার করে দিতে পারি। একটা সময় পর এর ফলাফল খুব ভালভাবে দেখতে পাব। সমগ্র পৃথিবী এখন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর উপর নির্ভরশীল।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ৫ টি লাভ ও সুবিধা
Social media আজকাল students থেকে শুরু করে business man, private চাকরি করা লোকেরা government চাকরি করা লোক কিংবা বয়স্ক লোকেরাও ব্যবহার করছেন। তাই, সোশ্যাল মিডিয়া গুলি ব্যবহার করে marketing বা advertisement করলে আমরা অনেক সহজে হাজার লক্ষ লোকেদের কাছে পৌঁছাতে পারি। এছাড়া, অনেক আরো লাভ বা সুবিধা রয়েছে, যেগুলি কেবল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং দ্বারা আমাদের হতে পারে।
Benefits of social media advertisements or marketing
নিচে ৫ টি সেরা এবং গুরুত্বপূর্ণ লাভ বা সুবিধার ব্যাপারে আমি আপনাদের এক এক করে বলে দিচ্ছি।
১. যেকোনো জিনিসের promotion সম্ভবঃ
ছোট বড়ো যেকোনো ব্যবসার বা প্রোডাক্ট এর promotion করতে পারব। আজ বিভিন্ন লোকেরা, নিজের ঘরেই বিভিন্ন প্রোডাক্ট এনে সেগুলি social media তে মার্কেটিং বা promotion করে বিক্রি করছেন। তাই, আমাদের ব্যবসা বা পণ্য (product) যেরকমই হোক না কেনো, আমরা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর দ্বারা সেটা সহজে প্রচার করতে পারব।
২. কম খরচে paid advertisementঃ
অনেক কম টাকায় এই প্রক্রিয়াতে মার্কেটিং বা প্রমোশন সম্ভব। বেশিরভাগ প্রক্রিয়া আমরা নিজেই করতে পারব এবং ফ্রীতেই। আমাদের কেবল, social media platform গুলিতে প্রোফাইল (profile) বা পেজ বানাতে হবে। এবং, তারপর নিজের product বা business এর ব্যাপারে লোকেদের ফ্রীতেই জানাতে পারব ও সময়ে সময়ে আপডেট (update) দিতে পারব। যদি আমরা, অধিক বেশি পরিমানে বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখাতে চাই, তাহলে paid advertisement এর মাধ্যমে সেটা সম্ভব। কিন্তু এতে, আমাদের কিছু টাকা খরচ করতে হবে। টাকা খরচ করতে হলেও, physical marketing এর প্রক্রিয়া গুলির তুলনাতে এই মাধ্যমে অনেক অনেক কম খরচে মার্কেটিং বা প্রমোশন সম্ভব।
৩. Targeted promotion বা marketingঃ
Physical marketing এর মাধ্যমে আমরা কোনোদিন কোনো ব্যক্তি বিশেষকে লক্ষ্য করে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারিনা। মানে, যদি আমরা রাস্তার পাশে বা রিস্কার পেছনে কোনো বিজ্ঞাপন লাগাই, তাহলে সেই বিজ্ঞাপন কে দেখবে আর কে দেখবেনা, সেটা আমাদের হাতে থাকে না। কিন্তু, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে করা মার্কেটিং বা প্রমোশনে আমাদের হাতে এ ধরনের সুযোগ থাকবে। মানে, আমরা কোন জায়গার লোকেদের টার্গেট করে বিজ্ঞাপন দেখাতে চাই, বিজ্ঞাপন কতদিন চলাতে চাই, বিজ্ঞাপন যাদের দেখানো হবে তাদের বয়েস কত হতে হবে এবং লোকেদের ইন্টারেস্ট এবং চাহিদার হিসেবে বিজ্ঞাপন দেখানো যাবে। তাই, আমরা নিজেরাই বুঝতে পারছি যে, এই ধরনের প্রত্যেকটি জিনিসের ধ্যান রেখে যদি আমরা অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া গুলিতে বিজ্ঞাপন দেই বা মার্কেটিং করি, তাহলে আমরা আমাদের ব্যবসার সাথে জড়িত গ্রাহক দেড় টার্গেট করতে পারব। এতে, আমাদের বিজ্ঞাপন দেখানোর উদ্দেশ্য ১০০% সফল হবে এবং নিজের ব্যবসার জন্য targeted customers বা consumers পেয়ে যাবো।
৪. সহজেই ভোক্তা (consumer) বা ক্রেতা (Buyer) পাবেনঃ
যা আমি ওপরেই বললাম, অন্য physical advertisement এর তুলনায়, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে করা মার্কেটিং বা advertisement এ আমরা সহজেই যেকোনো জায়গা, বিশেষ পাঠকবর্গ (audience), বিশেষ ইন্টারেস্ট থাকা ব্যাক্তি বা অডিয়েন্স এর বয়েস হিসেবে টার্গেট করে বিজ্ঞাপন চলাতে পারি। এই ক্ষেত্রে, এতো ভালো ভাবে লক্ষবস্তু (targeted) ব্যাক্তিদের বিজ্ঞাপন দেখানোর ফলে, অধিক পরিমানে conversion বা গ্রাহক পাওয়ার সুযোগ বেড়ে যায়। এবং, আজ হাজার হাজার লোকেরা এভাবেই নিজের ব্যবসার জন্য টার্গেটেড (targeted) কাস্টমার বা ক্রেতা পেয়ে যাচ্ছেন।
৫. Growing brand awarenessঃ
আজ আমরা যেকোনো জিনিস কেনার আগেই, জিনিসটির ব্র্যান্ড বা কোম্পানির নাম অবশই দেখি। একটি ভালো ব্র্যান্ড মানেই হলো অধিক বিশ্বাস বা ভরসা। তাই, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্র্যান্ড এর একটি ভালো ছবি তৈরি করতে পারব। দেশ বিদেশ এবং যেকোনো জায়গাতেই থাকা লোকেদের কাছে আমরা নিজের ব্র্যান্ড ও কোম্পানিকে নিয়ে যেতে পারব। পুরোনো মার্কেটিং এর তুলনায়, সোশ্যাল মিডিয়াতে করা প্রমোশনের অনেক লাভ বা সুবিধা রয়েছে। ধরা যাক আমাদের একটি চাদরের দোকান বা ব্যবসা রয়েছে। এবং, যখন আমরা সোশ্যাল মিডিয়া গুলিতে, “বয়েস”, “ইন্টারেস্ট” এবং “জায়গা” টার্গেট করে নিজের চাদরের ব্যবসার মার্কেটিং বা প্রমোশন করব, তখন ঘরে, অফিসে বা যেকোনো জায়গায় বসে থাকা লোকেরা ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব বা যেকোনো অন্য social media গুলির মাধ্যমে আমাদের পণ্য (product) বা business এর বেপারে জানবে। লোকেরা না চাইলেও আমাদের product বা business এর ব্যাপারে দেখবেন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। এভাবেই আস্তে আস্তে আমাদের ব্যবসা ও এর ব্রান্ডের ব্যাপারে লোকেরা জানবেন এবং লোকেদের মধ্যে আমাদের ব্রান্ডের ভালো ছাপ তৈরি হতে থাকবে। মনে রাখবেন, আজ যত বড়ো বড়ো ব্র্যান্ড রয়েছে, সবাই কিন্তু টিভি বা রেডিওতে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই আমাদের মনে ও মাথায় জায়গা করে নিয়েছে।
তাই, লোকেদের মধ্যে নিজের ব্যবসার ও ব্রান্ডের ভালো নাম তৈরি করার জন্য আজ টিভি ও রেডিওর কোনো কাজ নেই। আজ যুগ হলো, ‘Digital” এবং মার্কেটিং এর সেরা মাধ্যম হলো “Digital marketing” যেখানে “Social media marketing” এর গুরুত্ব অনেকটাই বেশি। তাই, আমাদের ব্যবসা বা পণ্য ছোট হোক কিংবা বড়, এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রক্রিয়া আমাদের অনেক সাহায্য করতে পারবে।
কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করব?
আমরা চাইলে বিভিন্ন ভাবেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারি। আমরা ফেসবুক, ইউটিউব এর মাধ্যমেও শুরু করতে পারি। কেননা বর্তমান সময়ে ফেসবুক আর ইউটিউব মার্কেটিং অনেক অনেক বেশি জনপ্রিয় এবং এই দুইটা সোশ্যাল মিডিয়া তে মানুষ অনেক বেশি সময় পার করে থাকে। তাই আমরা শুরু তে এই দুইটা মার্কেটিং করতে পারি আমাদের ওয়েবসাইট বা আমাদের প্রোডাক্ট এর জন্য। আসুন এবার কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং গুলাতে কাজ করতে হয় তার একটা সংক্ষিপ্ত বিবরন দিব আপনাদেরকে।
১। ফেসবুক মার্কেটিংঃ বাংলাদেশের কম-বেশি সবাই আমরা ফেসবুক ব্যবহার করে থাকি। সাধারণত যাদের বয়স ১৬-৫০ বছর এর মধ্যে এদের সংখ্যা খুব বেশি। আমরা চাইলে ফেসবুক এর মার্কেটিং করতে পারি, কেননা ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে সব থেকে বেশি ট্রাফিক ওয়েবসাইট এ আনা সম্ভব। আমরা যেকোনো একটা নিস নিয়ে কাজ করে ফেসবুক এর মাধ্যমে অসংখ্য ট্রাফিক আনতে পারব। আমরা নিউজ, খেলাধুলা, শিক্ষা-সংক্রান্ত্, ফান এই সব সাইট নিয়ে কাজ করতে পারি। আর ফেসবুক এ ভাল কিছু গ্রুপ এবং পেজ তৈরি করে আমরা অনেক অনেক ট্রাফিক আনতে পারব আমাদের ওয়েবসাইট টিতে। এতে করে একটা সুবিধা হবে আমাদের জন্য। আমাদের ওয়েবসাইট যদি ফেসবুক এ জনপ্রিয় হয়ে উঠে তাহলে খুব দ্রুত আমাদের ওয়েবসাইট র্যঙ্ক করবে। তাই বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মধ্যে ফেসবুক মার্কেটিং সব থেকে বেশি কার্যকর। বর্তমান সময়ে পৃথিবীর প্রাই প্রতিটা দেশে এর জনপ্রিয়তা অনেক অনেক বেশী। ফেসবুকের মাধ্যমে ফেসবুক ব্যবহারকারির কাছে কোন প্রতিষ্ঠান, পন্য বা সেবার প্রচারণা করে দেয়াকেই ফেসবুক মার্কেটিং করে। এটি আমরা নিজে বা কোন ফেসবুক মার্কেটারের মাধ্যমেও করতে পারি। সহজ অর্থে ফেসবুকে যে বিজ্ঞাপন দেয়া হয় তাকেই ফেসবুক মার্কেটিং বলে। যে কোন ধরণের বিজ্ঞাপন ই ফেসবুকে টাকার মাধ্যমে দেয়া যায়। এ ধরণের বিজ্ঞাপন সাধারণত আমাদের ফেসবুক নিউজফিডে বিভিন্ন পন্যের স্পন্সরড পোষ্ট আসে এবং আমাদের ফেসবুক এর ডান পাশে বিভিন্ন পন্যের ছবি বা অফার আসে আর এগুলকেই ফেসবুক বিজ্ঞাপন বলে। আসুন একটা জরিপ দেখি-
২০১৬ সালের জরিপ অনুস্বারে ফেসবুকের মাসিক একটিভ ব্যবহার কারির সংখ্যা ১.৮৬ বিলিয়ন। প্রতিদিন ফেসবুক ইউজারের সংখ্যা ১.১৫ বিলিয়ন। মোবাইলে ফেসবুক ইউজ করে এমন ইউজারের সংখ্যা ১.৭৪ । ফেসবুকে প্রতিদিন ছবি আপলোড এর সংখ্যা ৩০০ মিলিয়ন। ফেসবুকে প্রতি ভিজিটরের এভারেজ টাইম স্পেন্ড ২০ মিনিট। প্রতি মিনিটে ৫,১০,০০০ কমেন্টস, ২,৯৩,০০০ স্ট্যাটাস এবং ১,৩৬,০০০ ছবি আপলোড হয়ে থাকে। ফেসবুকে ১৬ মিলিয়ন লোকাল বিজনেস পেজ তৈরি করা হয়েছে। ৪২ % ব্যবসায়ী মনে করেন ফেসবুক তাদের বিজনেসের প্রধান হাতিয়ার। ১৮-২৪ বছর বয়সী ব্যবহারকারীর মধ্য ৫০% ব্যবহারকারী ঘুম থেকে উঠেই ফেসবু ব্যবহার করে বা বলা যায় ফেসবুকে এসেই তাদের ঘুম ভাঙ্গে। এক প্রতিবেদনে বলা হয় ফেসবুক ব্যবহার কারি প্রতি বছর ১৭% হারে বাড়ে এবং এটি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। একটু চিন্তা করুন ২০১৭ সালে ফেসবুকের একটিভ ব্যবহারকারী ১৮৬ কোটি । এখন আপনি নিজেই ভাবুন আপনি কেন ফেসবুক মার্কেটিং করবেন না।
২। ইউটিউব মার্কেটিংঃ বর্তমানে ইউটিউব এর অবস্থান দুই নাম্বারে। গুগল এর পরেই ইউটিউবের অবস্থান। কিন্ত মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ফেসবুক এর পরেই ইউটিউব এর অবস্থান। ইন্টারনেট এর সহজলভ্যতা যত বেশী বৃদ্ধি পাচ্ছে তার সাথে ইউটুব মার্কেটিং এর কার্যকারিতা তত বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আমরা যদি কোন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করি তাহলে ফেসবুক এ মার্কেটিং হবে আমাদের জন্য সব থেকে আদর্শ। আর যদি নিউজ নিয়ে কাজ করি তাহলে ইউটিউব আমাদের প্রথম পছন্দ থাকা উচিত। কেননা এখন মানুষ টেলিভিশনের সামনে বসে যতটা সংবাদ থেকে তার থেকে বেশি সময় এখন ইউটিউব এ সংবাদ বেশি দেখে। আমাদের ওয়েবসাইট যদি শিক্ষা সংক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে আমাদের অবশ্যই ইউটিউব নিয়ে মার্কেটিং করতে হবে। কেননা শিক্ষার জন্য ইউটিউব এখন সব থেকে বড় প্লাটফর্ম। আমরা খুব সহজে একটি ভিডিও ভাইরাল করার মাধ্যমে আমাদের কোম্পানির বা ওয়েবসাইটের প্রচারও বাড়াতে পারব। ২০১৭ সালের হিসাব অনুসারে ইউটুব ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১,৩০০,০০০,০০০। প্রতিদিন প্রায় ৫ বিলিয়ন ইউটুব ভিডিও দেখা হয়। প্রতিদিন ৩০ মিলিয়ন ভিজিটর আসে। এই এত ট্রাফিক এর কারনেই ইউটুব এই মুহূর্তে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সব থেকে বড় মাধ্যম।
৩। ইন্সটাগ্রামঃ বর্তমান সময়ের অন্যতম আরেকটি জনপ্রিয় ফোটো শেয়ারিং এর মাধ্যমের নাম ইন্সটাগ্রাম। বর্তমানে ৬০০ মিলিয়ন ইনিস্টাগ্রামের একটিভ ইউজার আছে। প্রতিদিনের হিসাব অনুযায়ী ৪০০ মিলিয়ন একটিভ ইউজার আছে। ১৫০ মিলিয়ন ইউজার তাদের স্টোরি প্রতিদিন ইন্সটাগ্রামে শেয়ার করে থাকে। টোটাল ইন্টারনেট ইউজারের ২০% মানুষ ইন্সটাগ্রাম ব্যবহার করে। এত কিছুর পরেও আপনি কিভাবে ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং না করে বসে থাকবেন। আপনি ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং না করলে এই ২০% ইন্টারনেট ব্যবহারকারী আপনার এই বিজ্ঞাপনটি সম্পর্কে জানতেই পারবে না।
৪। গুগল প্লাস মার্কেটিংঃ প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলের সামাজিক যোগাযোগ সেবা গুগল প্লাস। এতে ১০০ কোটির বেশি নিবন্ধিত ও নিয়মিত ৬০ কোটির অধিক সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে। প্রতিনিয়ত এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গুগল অথরশিপ হওয়ায় এটি অনলাইন মার্কেটিংয়ের একটি অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাড়িয়েছে। আমাদের যদি ওয়েবসাইট থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কিছু গুগল প্লাস অ্যাকাউন্ট থাকা দরকার। কেননা আমরা যদি ওয়েবসাইটের সব পোস্ট গুলো গুগল এ ইনডেক্স না করাই তাহলে কখনই আমাদের পোস্ট গুলো গুগলে প্রথম পাতায় শো করবে না। তাই গুগল প্লাস মার্কেটিং অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। আমরা যদি প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটিং করতে চাই তাহলে গুগল প্লাস অনেক বেশি দরকারি আমাদের ওয়েবসাইট এর জন্য। কেননা গুগল প্লাস গুগলের একটা প্রোডাক্ট। আমরা যখন গুগল প্লাস এ কিছু শেয়ার করব তখন গুগল প্রোডাক্ট তা ইনডেক্স করে নিচ্ছে। এটা আমাদের ওয়েবসাইট এর জন্য খুবি গুরুত্বপূর্ণ। তাই যখই আমাদের কোন ক্রেতা এই প্রোডাক্ট এর নাম লেখে সার্চ দিবে গুগল তখন আমাদের প্রোডাক্টটি প্রথমে বা প্রথম পাতায় শো করবে।
৫। টুইটার মার্কেটিংঃ টুইটার ব্যবহারকারীর নিকট আমাদের বিজ্ঞাপন পৌঁছে দেয়ার সিস্টেমকেই টুইটার মার্কেটিং বলে। এখনে আমরা অডিও, ভিডিও, টেক্সট এর মাধ্যমে আমাদের প্রচার চালাতে পারব বা একটা একটিভ প্রোফাইলের মাধ্যমেও আমাদের প্রচার ও চালাতে পারি। আমরা টেক্সট এর ক্ষেত্রে এখানে সর্বোচ্চ ১৪০ অক্ষরের বার্তা আদান-প্রদান ও প্রকাশ করতে পারব। টুইট বার্তা লেখার জন্য সদস্যরা সরাসরি টুইটারের মেইন ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন তাছাড়াও, মোবাইল ফোন বা এসএমএসের মাধ্যমেও টুইট আপডেট করার সুযোগ রয়েছে।
২০০৬ এর জুলাই মাসে জ্যাক ডর্সি আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন। টুইটার বর্তমানে সারা বিশ্ব্জুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। টুইটার বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ২০১০ সালের ৩১শে অক্টোবর টুইটারে ১৭৫ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৭.৫ কোটিরও বেশি সদস্য ছিলো। অন্যান্য পরিসংখ্যান অনুসারে একই সময়ে টুইটারের ১৯০ মিলিয়ন বা ১৯ কোটি সদস্য ছিলো এবং দিনে ৬৫ মিলিয়ন বা সাড়ে ৬ কোটি টুইট বার্তা, এবং ৮ লাখ অনুসন্ধানের কাজ সম্পন্ন হতো। আবার ২০১৬ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী টুইটারের সদস্য সংখ্যা ৩১৯ মিলিয়ন। প্রতি ১ মিনিটে ৩,৫০,০০ টুইট হয়, প্রতি দিন ৫০০ মিলিয়ন টুইট হয় এবং বছরে ২০০ বিলিয়ন টুইট হয়। টুইটারকে ইন্টারনেটের এসএমএস বলে অভিহিত করা হয়।
৬। লিঙ্কডইন মার্কেটিংঃ প্রায় ২৮ কোটি ব্যবহারকারী নিয়ে লিংকডইন বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রফেশনাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট। বর্তমান সময় লিঙ্কডইন মার্কেটিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। লিঙ্কডইন মার্কেটিং এখন অনেক কার্যকরী এবং ফলপ্রসূ। লিঙ্কডইন এর মাধ্যমে আমরা চাইলে অনেক ট্রাফিক আমাদের ওয়েবসাইট এ আনতে পারব এবং খুব ভাল একটা ইমেজ তৈরি করে ফেলতে পারি। আমাদের ওয়েবসাইটের সব গুলো পেজ বা সব গুলো প্রোডাক্ট আমরা লিঙ্কডইন এ নিয়মিত শেয়ার করলে খুব ভাল ফিডব্যাক পাব।
এতে আমাদের প্রফেশনাল প্রোফাইল তৈরি করার ও কমিউনিটি তৈরির সুযোগ পাব। লিংকডইনও আমাদের পণ্য বা সেবার জন্য ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি তৈরির সুযোগ সুবিধা দেয়। এই সাইট থেকে আমরা কি কি সুবিধা পাব-
• এখানে আপনার ব্র্যান্ডের জন্য গ্রুপ তৈরি ও সংযুক্তদের সঙ্গে তা প্রোমোট করতে পারবেন।
• তৈরি করা ব্র্যান্ড গ্রুপকে নিজের মতো সাজাতে পারবেন।
• আপনার গ্রুপে যারা আছে তাদের মাধ্যমেই নতুন কানেকশনের সাজেশন পাবেন। যার মাধ্যমে আপনার নেটওয়ার্ক আরও বৃদ্ধি পাবে।
• আপনার ব্যবসায়ের ধরণ অনুযায়ী সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট খুজে নিতে পারবেন।
• সহজে ইমেল কালেক্ট করে ই মেইল করতে পারবেন তাদের কাছে।
৭। পিন্টারেস্ট মার্কেটিংঃ এটি বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত জনপ্রিয় হওয়া সোশ্যাল বুকমার্কিং সেবার সাইট। বর্তমানে প্রায় ৮ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে সাইটটির। ছবি ভিত্তিক এই ওয়েবসাইটটি আপনার পণ্য ও সেবার অনলাইন মার্কেটিংয়ে সবচেয়ে কাজে দিবে। এখানে আপনি যা যা সুবিধা পাবেন-
• এই নেটওয়ার্কে আপনার বিজনেস প্রোফাইল তৈরি করতে পারবেন।
• এটি আপনার ব্যবসায়ের নামানুসারে একটি পার্সোনালাইজড ইউজার নেম দেয়।
• এখানে আপনার অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া লিংক যুক্ত করতে পারবেন। যেমন এই সাইটের সঙ্গে আপনার ফেইসবুক প্রোফাইল যুক্ত থাকলে আপনি যখনই কোনো ছবি পিন করবেন, তখন এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ফেইসবুকে শেয়ার করে দিবে। আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকলে এই সাইট থেকে ডুফলো ব্যাকলিংক পেতে পারেন।
আমরা আগামি পর্বে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং মাধ্যম সমূহ গুলোকে আলাদা আলাদা ভাবে বিস্তারিত লেখা প্রকাশ করা হবে, আমাদের সাথেই থাকুন।
Jowel Das Provas
eksathe onek gulo information pelam, pore valo laglo, thanks a lot vy. poroborti post er jonno opekkhai roilam
MHK Hanif Khan
It is a helpful post.
Me Arman
Ok
Kibria
Helpful post…thanks for sharing with us
Mohammad bashir uddin
Thanks to know it
Rifat
Onek vlo akta post
A.S.M. Tawhidur Rahman
Thanks For Your Information
Tomas Roy
nicee
Tomas Roy
xosss
Tomas Roy
niceeesss