ফাইভার কি?:
ফাইভার এর মাধ্যমে আয় করা সম্পর্কে জানুন ফাইভার হল একটা অনলাইন মার্কেটপ্লেস। এখানে সেলার কোন একটি কাজের জন্য গিগ তৈরী করে। ওই গিগটি যদি কোন বায়ারের দরকার হয় তাহলে গিগটা সে কিনবে। এভাবে ফাইভারে গিগ তৈরী করে আয় করা যায়। ফাইভার হলো একটি ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেস। এখানে সার্ভিসেস কিনা বেচা হয়। প্রত্যেক সার্ভিসের মূল্য কমপক্ষে ৫ ডলার। যেহেতু এটি একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস সেহেতু এখানে অনলাইন এবং প্রযুক্তি ভিত্তিক বিভিন্ন সেবা বিক্রি করা হয়। ফাইভার এ যে কোন ধরনের সেবা দিয়ে গিগ তৈরি করা যেতে পারে। সেটা হতে পারে একাউন্ট তৈরি করা থেকে শুরু করে সেই একাউন্টকে কম্পিলিট করা পর্যন্ত। এখানে কাজ করতে হলে অবশ্যই কোনো কাজে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। যে কাজে পারদর্শী তেমন কিছু কাজ দিয়ে একাউন্ট সাজিয়ে রাখতে হবে যাতে বায়ারা সেটা দেখে আকষিত হয়। এটাকে ফাইভারের ভাষায় গিগ বলে। গিগ যত আকর্ষনিয় হবে কাজের তত রিকুয়েস্ট তত আসবে। এইসব কাজ করে দিতে পারলেই ঘরে বসে আয় করা যায়। ফাইভার এ সারা বিশ্বের অনেক বায়াররা বিভিন্ন ধরনের কাজ দিয়ে থাকে। এখানে অনুবাদের কাজ থেকে শুরু করে গ্রাফিক্স ডিজাইন, এসইও এবং অন্যান্য কাজ পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে সহজে কাজ পাওয়ার জন্য নুতন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ভিন্ন ধারার সেরা অনলাইন মার্কেটপ্লেস ফাইভার। ফাইভার ইতিমধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস হিসেবে সবার কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এ মার্কেটপ্লেসে গিগ এর রেট ৫ ডলার দেখে অনেকে কাজ করতে কম উৎসাহিত হয়। আসলে বিষয়টি ঠিক এরকম না। এ মার্কেটপ্লেসে কাজ করে অনেকে প্রতিমাসে গড়ে ১৫০০ ডলারের বেশীও আয় করছেন। এখানে বায়ার নয়, বরং ফ্রিল্যান্সাররাই কাজের অফার টিউন করে থাকে এবং বায়ার উক্ত অফার কিনে নেয়। এখানে প্রতিটি অফার বা কাজকে গিগ বলা হয়। প্রতিটি অফার বা গিগ এর মূল্য মাত্র ৫ ডলার হওয়ায় গিগগুলো দ্রুত সেল হয়ে থাকে। এজন্য দেখা যায়, অনেকেই যারা আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার এ সুবিধা করতে পারছেন না, কিন্তু ফাইভার থেকে ভাল আয় করছেন।
গিগ কি?:
গিগ হল একটা কাজের অফার বা সার্ভিস এর নাম। একটা গিগ বানানোর জন্য এইখানে অফার বা সার্ভিস এর কিছু শর্ত দিতে হবে। যেমন: যদি বলা হয় কাজটি একদিনের ভিতর শেষ করা হবে তাহলে তা একদিনের ভিতরই শেষ করতে হবে। এর জন্য প্রোফাইলে ২৪ ঘন্টা বা এক দিনের একটি টাইমার দেখাবে। একটি সার্ভিস সেল করার জন্য সেটির বর্ণনা যে ঘরে সাজানো হয় তাকেই গিগ বলে। প্রাথমিক ভাবে ফাইবার গিগটির মূল্য $৫ ডলার অফারে বিক্রি করে কাস্টমারের বা বায়ারের কাছে।
ফাইভার এ কি কি সার্ভিস সেল করা যায়:
আর্টিকেল বা ব্লগ পোস্ট লিখে
আর্টিকেল বা ব্লগ পোস্টগুলি এডিট করে
রিসুম এবং কভার লেটার লিখে
প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন লিখে
হেডিং লিখে
ইমেইল লিখে
এসইও রিলেটেড সার্ভিস
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
ওয়েব ডিজাইনিং
লোগো এবং ব্যানার ডিজাইনিং
বিজনেস কার্ড ডিজাইনিং
ক্রিয়েট পিডিএফ ফাইল
কিওয়ার্ড রিসার্চ ইত্যাদি
ফাইভার এ কাজ করার পদক্ষেপসমূহ:
প্রথমত একটি ফাইভার একাউন্ট থাকতে হবে। ফাইভারে কখনো ব্যক্তিগত কোনো তথ্য দেয়া যাবেনা। কোনো ওয়ার্কার সরাসরি বায়ারের সাথে যোগাযোগ করুক ফইভার তা কখনই চায়না। ফাইভারের সকল নিয়ম মেনে যেসব কাজে দক্ষ সেসব কাজের উপর আকর্ষনীয় গিগ তৈরী করতে হবে। সঠিক নিয়মে গিগ তৈরী করা থাকলে ফাইভার নিজেই গিগ মার্কটিং করবে। কাজের ক্যাটাগরি অনুযায়ী বায়ারের কাছ থেকে রিকুয়েষ্ট আসবে এবং তার সঠিক রিপ্লাই দিতে হবে। গিগ পছন্দ হলে বায়ার কাজ দিবে। কাজ এর বিষয় সবকিছু বায়ারের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে। এরপর কাজ সম্পূর্ন করে বায়ারের কাছে জমা দিতে হবে। তাহলেই কাঙ্খিত মূল্য পাওয়া যাবে। তারপর আয়ের টাকা ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করতে হবে।
ফাইভার সেলার একাউন্ট সাধারনত ৩ টি লেভেল এর হয়ে থাকে:
লেভেল ১ সেলার: যেসব সেলার কমপক্ষে ১০ বার বা তার বেশি সার্ভিসটির অর্ডার পেয়ে কাজ শেষ করে বায়ারকে দিতে পারবে এবং বায়ার এর নিকট থেকে ১০ বার ভালো রেটিং পাবে তহলে ঐ সার্ভিসটির সেলার অটোমেটিক্যালি Level 1 এ চলে আসবে এবং Advanced services অফার করার সুযোগ পাবে এবং আয়ও বৃদ্ধি পাবে।
লেভেল ২ সেলার: যেসব সেলার পূর্ববর্তী ২ মাসে ৫০ বারের বেশি ভাল রেটিং এবং ট্রাক সহকারে বায়ারকে সার্ভিস দিতে পারবে, সেসব সেলার স্বয়ংক্রিয়ভাবে Level 2 পদ অর্জন করবে। এ লেভেলে অনেক বেশি ফিচার যুক্ত হবে ও প্রায়োরিটি সাপোর্ট পাবে এবং আয়ও বেড়ে যাবে।
টপ রেটেড সেলার: টপ রেটেড লেভেলের সেলার নির্ধারিত হয় ফাইভার সাইট কতৃপক্ষের বাছাইয়ের মাধ্যমে। ফাইভার সাইট কতৃপক্ষ লেভেল ২ সেলারদের মাঝে থেকে বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে টপ রেটেড সেলার নির্ধারণ করে থাকে।
ফাইভারে যে ধরনের গিগ তুলনামূলক বেশি সেল হয়:
অনলাইন মার্কেটিং
ভিডিও এবং এনিমেশন ক্রিয়েটিং
ভয়েস নেয়ারেশন
প্রফেশনাল আর্টিকেল রাইটার
ইমেজ স্ক্রেচ
লোগো ডিজাইন
বিজনেস কার্ড ডিজাইনিং
প্রোগ্রামিং ইত্যাদি।
গিগ কিভাবে সাজালে অর্ডার পাওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকবে:
টাইটেল: একজন বায়ার এর নজরে সর্ব প্রথম যে বিষয়টি আসে তাহলো গিগ এর টাইটেল। তাই টাইটেলটা এট্রাক্টিভ করে ক্লিয়ার করতে হবে কি ধরনের সার্ভিস দেওয়া হবে। বায়ার যেহেতু টাইটেল এর উপর দৃষ্টি রাখেন, তাই টাইটেল এ যথাসম্ভব গিগ এর কিওয়ার্ডগুলো লেখার চেষ্ট করা। তাহলে বায়ার সহজে গিগটি বুঝতে পারবেন।
ছবি: গিগে অফার রিলেটেড সুন্দর একটি ছবি আপলোড করতে হবে যা গিগটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলবে । গিগে সংশ্লিষ্ট একাধিক ছবি/ভিডিও অফারটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। একটি কার্যকরী ছবি/ভিডিও অনেক বর্ণনারে চেয়েও ভাল। সুতরাং অফারের সাথে যে ছবি/ভিডিও সংযুক্ত করা হবে সেটি গুরুত্বের সাথে নির্বাচন করতে হবে।
ড্রেস্ক্রিপশন: ড্রেস্ক্রিপশনটি সুন্দর করে লিখতে হবে। ডেস্ক্রিপশনটি শর্ট হবে কিন্তু তার মধ্যেই অফারটি সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে। তাহলে বায়ার সার্ভিসটি কেনার ব্যপারে বেশি প্রাধান্য দিবেন। গিগের বর্ণনা তারাই পড়বে যারা টাইটেল এবং ছবি দেখে আগ্রহী হয়ে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করবে। সুতরাং বিবরণটি এমনভাবে লিখতে হবে যেন বায়ার গিগ কেনার জন্য ইমপ্রেস হন।
ফাইভারে আকর্ষণীয় গিগ তৈরির ক্ষেত্রে কিকি বিষয় অনুসারন করা দরকার:
গিগটি তৈরির সময় যে শর্ত দেয়া হয় সেই অনুসারে কাজ সম্পন্ন করতে হবে। গিগ তৈরীর ক্ষেত্রে নিম্নোলিখিত বিষয় গুলি অনুসরন করতে হয়:
১) গিগ টাইটেল: সুন্দর একটি গিগ টাইটেল থাকলেই অফারটি বায়ারদের নিকট বেশি গ্রহণযোগ্য হবে। কোনো ধরনের সার্ভিস দেয়া হবে তা গিগ টাইটেল উল্লেখ করা হয়। গিগের টাইটেলটি আকর্ষণীয় করতে হবে যাতে যে কেউ টাইটেলটা দেখেই ভিতরে গিয়ে পড়তে আকর্ষণবোধ করে। টাইটেলে অবশ্যই সার্চের সম্ভাব্য কীওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। গিগ টাইটেলে একই শব্দ একাধিক বার ব্যবহার করা যাবে না।
একটু সুন্দর গিগ টাইটাল দিতে হবে। লোগো ডিজাইন হলে
“I will design professional logo for you”
“I will design creative logo for you”
“I will design eye catching logo for you”
এই ধরনের টাইটাল ব্যবহার করা যেতে পারে। টাইটাল এ কোন দাড়ি, কমা, অথবা এই ধরনের কোন চিহ্ন ব্যবহার করা যাবেনা, ফাইবার এগুলি সাপোর্ট করে না।
২) ক্যাটাগরি: গিগের ওপর ভিত্তি করেই ক্যাটাগরি নির্বাচন করতে হবে। ক্যাটাগরি অবশ্যই গিগের সঙ্গে মিল থাকতে হবে। ক্যাটাগরি দেয়া হলে সাব-ক্যাটাগরি নির্বাচন করতে হবে।
৩) গিগ গ্যালারি: গিগ গ্যালারিতে সার্ভিস সম্পর্কিত ছবি আপলোড করতে হবে। ছবি বা ইমেজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন কাউকে হঠাৎ করে দৃষ্টি আকর্ষণ করানো যায়, এরকম কিছু ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি কার্যকরী ছবি হাজারটি বাক্যের চেয়েও অনেক গুরুত্ব বহন করে। ইমেজ সাইজ ৫ এমবির নিচে হতে হবে। গিগ গ্যালারিতে সর্বোনিম্ন ১টি ও সর্বোচ্চ ৩টি ইমেজ ব্যবহার করা যায়। ছবিগুলোর সাইজ প্রস্থ ৬৮২ পিক্সেল ও উচ্চতা ৪৫৯ পিক্সেল হতে হবে। সুতরাং অফারের সঙ্গে যে ছবিটি সংযুক্ত করা হবে সেটি গুরুত্বের সঙ্গে বাছাই করতে হবে।
৪) গিগ ডেসক্রিপশন: গিগ ডেসক্রিপশন এ সার্ভিস সম্বন্ধে বিস্তারিত লিখতে হবে যাতে বায়ার এখান থেকে সার্ভিস সম্বন্ধে যথেষ্ট ধারণা পায় এবং আকৃষ্ট হয়। সার্ভিসের ডেসক্রিপশন তারাই পড়বে যারা টাইটেল এবং ছবি দেখে আগ্রহী হওয়ার পর আরও বিস্তারিত জানতে ক্লিক করবে। সুতরাং ডেসক্রিপশনটি এমনভাবে লিখতে হবে যেন এটি পড়লে বায়ার সার্ভিসটি কেনার জন্য অর্ডার করে। উপস্থাপনা যত ভালো হবে গিগ সেল হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।
৫) ট্যাগস: সার্ভিস রিলেটেড কিওয়ার্ড ট্যাগে ব্যবহার করতে হবে। গিগটি যে ধরনের কাজের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে সে ধরনের কাজের উপর ৫টি কিওয়ার্ড নির্ধারণ করতে হবে এবং সর্বোনিম্ন ৩টি কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। কিওয়ার্ড রিসার্চ করে ট্যাগ ব্যবহার করলে ভালো হয়। এর ফলে ক্লাইন্ট গিগটি সহজে খুঁজে পাবে এবং অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। বায়ার যখন ফাইবার এ কাজ এর জন্য আসে সে কিন্তু একটা একটা গিগ দেখে না। সে সার্চ বক্স এ সার্চ করে তারপর সেখান থেকে একজনকে কাজ দেয়।
৬) ডিউরেশান: যে সার্ভিসের উপর গিগ তৈরি করা হয়েছে প্রথমে তা চিন্তা করতে হবে যে এই সার্ভিসটি সম্পন্ন করতে কতটুকু সময় লাগবে বা অন্যরা একই সার্ভিস কতটুকু সময়ের মধ্যে ডেলিভারি দিচ্ছে। ডিউরেশান ১ থেকে ২৯ দিন পর্যন্ত দেয়া যায়। ফাইভারে সাধারণত ডিউরেশান ১ থেকে ২ দিন দেয়া হয় ।
৭) ইন্সট্রাকশান ফর বায়ার: বায়ার কতৃক সার্ভিসটি নিতে হলে কি কি শর্ত পূরণ করতে হবে এই অপশনে এগুলো উল্লেখ করতে হবে। এখানে কাজ করার জন্য বায়ারের কাছ থেকে কি কি দরকার হবে তা উল্লেখ করতে হবে। যেমন: ইমেজ, ইউজার, পাসওয়ার্ড, কন্টেন্ট ইত্যাদি। বায়ারের কাছ থেকে সেলারের চাহিদা উল্লেখ করে দিতে হবে যাতে পরবর্তীতে ডেলিভারি দিতে সমস্যায় পরতে না হয় অর্থাৎ এই সার্ভিসটি নিতে হলে বায়ারের এই তথ্যগুলো লাগবে।
৮) গিগ ভিডিও: গিগে ভিডিও যুক্ত করলে সেটি সেল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। ভিডিও অবশ্যই গিগের উপর ভিত্তি করতে হতে হবে। ভিডিও অবশ্যই ১ মিনিট বা তার কম হতে হবে। ভিডিও এর কোয়ালিটি ভাল হতে হবে এবং ভিডিও তে অবশ্যই সাউন্ড থাকতে হবে।
গিগকে সার্চের ফলাফলের প্রথমে রাখতে করনীয়:
ফাইভারে কাজ পেতে হলে গিগকে সার্চের ফলাফলের প্রথমে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমেই গিগ অপ্টিমাইজ, গিগ পপুলারিটি অর্জন ও গিগ রিভিউ বৃদ্ধির জন্য কাজ করতে হবে। কোন বায়ারের যখন কোন সার্ভিস দরকার হয়, তখন ফাইভারে গিয়ে সার্চ করে। তখন সার্চের প্রথম দিকে গিগটিকে পাওয়া গেলে বিক্রির সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
গিগ অপ্টিমাইজ: গিগের টাইটেলটি আকর্ষণীয় হতে হবে এবং টাইটেলে অবশ্যই সার্চের সম্ভাব্য কীওয়ার্ড থাকতে হবে। ট্যাগের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য রিলেটেড কীওয়ার্ডগুলো ব্যবহার করতে হবে। নতুন কেউ দেখলে আকৃষ্ট হবে এমন ছবি ব্যবহার করতে হবে। আবার ফাইভারের নিয়ম মেনে ভিডিও তৈরি করলে গিগ বিক্রির সম্ভাবনা ৬০% বেড়ে যায়।
গিগ পপুলারিটি অর্জন: প্রচুর মানুষকে গিগটি পড়াতে পারলেই গিগের পপুলারিটি অর্জিত হয়। প্রচুর মানুষকে গিগটির লিংকে ক্লিক করানোর জন্য জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলোতে যেমন: ফেসবুক, টুইটার, লিংকডিন, রেডিট ইত্যাদিতে শেয়ার করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ গিগটি লোগো ডিজাইন সম্পর্কিত হলে আকর্ষণীয় লোগো ডিজাইনের উপর কোন ব্লগপোস্ট লিখে পোস্ট করতে হবে। পোস্টটি প্রচুর মানুষ পড়বে, প্রচুর মানুষকে লেখাটি আকর্ষণও করবে। সেই পোস্টের ভিতর গিগের লিংকটি দিলে গিগটিতে অনেক ভিজিটর আসবে ।
গিগ রিভিউ বৃদ্ধি: পপুলারিটি অর্জনের পর গিগ অনুযায়ী কাজ করে এবং সময়মত কাজ ডেলিভারি দিয়ে বায়ারের কাছ থেকে ভাল ফিডব্যাক সংগ্রহ করতে হবে। যতবেশি ভাল ফিডব্যাক, ততবেশি গিগ সার্চের উপরে উঠতে থাকবে।
ফাইভার গিগ মার্কেটিং:
শুধু এসইও করে থেমে থাকলেই হবে না, গিগ এর জন্য আলাদা ভাবে মার্কেটিংও করতে হবে। এছাড়া প্রথম দিকে বিক্রয় করা অনেকটা কষ্টকর হবে।
১) ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে মার্কেটিং: প্রফেশনালভাবে গিগ মার্কেটিং করতে হলে একটি ওয়েবসাইট থাকা প্রয়োজন। কারণ একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজের সম্পর্কে সহজেই সবকিছু তুলে ধরা যায়। কোন কোন কাজগুলো ভালো পারি, আগের কাজের অভিজ্ঞতা, আগের ক্লায়েন্টের অভিমত, কাজের স্যাম্পল ইত্যাদি একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা যায়। এই সকল কিছু দেখে ক্লায়েন্ট গিগ অর্ডার করতে অনুপ্রানিত হয়। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গিগ মার্কেটিং করতে হলে প্রথমে সঠিকভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে এবং দ্বিতীয়ত ওয়েবসাইটে ভিজিটর নিয়ে আসতে হবে। ওয়েবসাইটটি হতে হবে সিভির মত। যাতে একজন ক্লায়েন্ট সহজেই জানতে পারে কি কি কাজ জানি এবং কাজে কতটুকু দক্ষ।
২) সোস্যাল মিডিয়া এর মাধ্যমে মার্কেটিং: গিগ মার্কেটিং এর জন্য একটি অন্যতম মাধ্যম সোস্যাল মিডিয়া। এখানে সকল ধরণের প্রোফেশনাল ব্যক্তিদের পাওয়া যায়। এই সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে টার্গেটেড কানেকশন বৃদ্ধি করতে হবে। তারপর নিয়মিত সার্ভিস সম্পর্কিত বিভিন্ন পোষ্ট করতে হবে। মাঝে মাঝে ওয়েবসাইটের গিগের পেইজটি পোষ্ট করতে হবে। কখনো একটি গিগের ছবির সাথে লিঙ্ক দিয়ে, কখনো সরাসরি গিগ পেইজের লিঙ্ক দিয়ে আবার কখনো সরাসরি ফাইভারের গিগের লিঙ্ক দিয়ে মার্কেটিং করা যাবে। সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে টার্গেটেড ব্যাক্তিদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করতে হবে। এর ফলে গিগ সেল হতে সাহায্য করবে। বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গিগ মার্কেটিং করা যায় যেমন: লিঙ্কডিন, টুইটার, ওয়ারিয়র ফোরাম, ফেসবুক, ইউটিউব ভিডিও ইত্যাদি।
ফাইভার একাউন্টে যে বিষয় গুলো মেনে চলা দরকার:
১) অরিজিনাল নামটি অথবা নিশ রিলেটেড নাম username হিসেবে ব্যবহার করা।
২) সোশ্যাল সাইট এর প্রোফাইল এ্যাড করা।
৩) সিকিউরিটি কশ্চিন এ্যাড করা।
৪) প্রোফাইল পিকচার হিসেবে সিম্পেল এবং হাসি দেয়া একটি ছবি আপলোড করা।
৫) নিজের সম্মন্ধে এবং কি সার্ভিস দেওয়া হবে সেটির একটি শর্ট ডিস্ক্রিপ্সন দেওয়া।
ফাইভার একাউন্টে যে বিষয় গুলো এড়িয়ে চলা দরকার:
১) নিজেকে আমেরিকান বা ব্রিটিশ সেলার বোঝানোর জন্য প্রক্সি ব্যবহার করা। এক্ষেত্রে কোনো দেশ নয় বরং কাজের যোগ্যতাই ঠিক করবে কত টাকা আর্ন করা যাবে। যদি কেউ কাজে দক্ষ থাকে তাহলে নন আমেরিকান বা ব্রিটিশ হয়েও অনেক টাকা আর্ন করতে পারবে।
২) প্রাপ্ত অর্ডার গুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কমপ্লিট করতে না পারা।
৩) ইমেইল আইডি বা সরাসরি কন্টাক্ট করা যাবে এমন কোনো বিষয় শেয়ার করা।
৪) ব্যক্তিগত কোনো ইনফরমেশন দেওয়া যার কারনে একাউন্ট ব্যান্ড হয়ে যাবে।
৫) এমন কোনো গিগ ক্রিয়েট করা যে কাজ পারা যাবেনা।
৬) একের অধিক ২টি একাউন্ট ক্রিয়েট করা।
ফাইভারের সুবিধা ও অসুবিধা:
ফাইভারে কিছু সুবিধা আছে যা অন্যান্য মার্কেটপ্লেসে নেই। ফাইভারের সুবিধা সমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো:
১) মার্কেটপ্লেসে যারা নতুন তাদের ফাইভারে কাজ করা উচিত। কারণ এখানে নতুনরা খুব সহজেই কাজ পাবেন।
২) এখানে ক্রিয়েটিভ কিছু কাজ পাওয়া যায়, যাহা অন্যান্য মার্কেটপ্লেসে পাওয়া যায় না।
৩) যদি ফাইভারে ১০টি গিগ সেল করা যায় ও ফিডব্যাক হয় এবং একাউন্ট যদি ১ মাস একটিভ থাকে তাহলে লেভেল ১ এ যাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে ফাইভার কতৃপক্ষ একাউন্ট এ একটি লেভেল ১ এর ব্যাচ দিবে।
৪) ফাইভারে দিনে অল্প সময় দিতে পারলেই চলবে। সারাদিন ফাইভারে থাকার দরকার নেই।
৫) ভাল কিওয়ার্ড দিয়ে গিগ করতে পারলে দিনে অনেক ডলার আয় করা যাবে।
ফাইভারে কাজ করার কিছু অসুবিধা নিম্নোরুপ:
১) এখানে কাজ করতে হলে অনেক ধৈর্য ধরে কাজ করতে হবে। কারণ প্রথম দিকে গিগ খুব কম সেল হবে।
২) ফাইভারে এত গিগের ভিতর গ্রাহক কিভাবে আমার গিগ খুঁজে পাবে, এজন্য একটু আলাদা মার্কেটিং করতে হবে।
৩) ফাইভার মার্কেটপ্লেস এর সবচেয়ে বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে এটি একটি খুবই সেনসেটিভ মার্কেটপ্লেস। খুব অল্প সমস্যার কারনে এরা একাউন্টটি যে কোন মুহুর্তে ডিলিট করে দিতে পারে তবে একাউন্ট এ কোন ব্যালেন্স থাকলে এরা সেটা ৪৫ দিন পর ফেরত দিয়ে দিবে।
অনলাইন এ কখন থাকলে কাজ পাওয়া সম্ভবনা বেশী:
রাতে অনলাইনে থাকলে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ আমাদের দেশে বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট USA এর সুতরাং timezone অনুসারে আমাদের এখানে যখন রাত তখন USAতে দিন, তাই রাতে অনলাইনে থাকলে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে দিনে পাওয়া যায় না এমন না, দিন ও অন্যান্য দেশের Client পাওয়া যাবে। সকালে বেশিরভাগ Client Knock করে থাকে যারা অফিসের বাইরে পার্সোনালি কাজ করিয়ে নেয়। সাধারনত মাঝরাত থেকে সকালের দিকে একটিভ থাকলে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি ।
Munna
সুন্দর পোষ্ট চালিয়ে যান।